যৌন হয়রানিতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে ঢাবির সিনেট নির্বাচনে নীল(আওয়ামী) দলের মনোনয়ন!
যৌন হয়রানিতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে ঢাবির সিনেট নির্বাচনে নীল(আওয়ামী) দলের মনোনয়ন!
সংবাদটি পড়েছেন:268,299
ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের প্যানেলে ছাত্রীদের উপর যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল।
অভিযুক্তরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আকরাম হোসেন এবং লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ মে) নির্বাচনের প্যানেল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। নীল দল ও বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল তাদের ৩৫ সদস্যের মনোনীত প্যানেল রেজিস্টার কার্যালয়ের নির্বাচন শাখায় মনোনয়ন জমা দিয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক আকরাম হোসাইনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেন বিভাগটির ৬ষ্ঠ ব্যাচের এক ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে সম্প্রতি ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে শিক্ষক নিয়োগের আগে বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আকরাম তাকে ‘অনৈতিক’ ও ঘৃণ্য প্রস্তাব দেন। তিনি রাজি না হলে তখন তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তার এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিয়োগটি সাময়িক স্থগিত করে সিন্ডিকেট। একইসঙ্গে অভিযোগটি খতিয়ে দেখতে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে পাঠানো হয়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যাপক আকরাম বলেন, এটা আসলে নির্যাতনের অভিযোগ নয়; এটা চাকরি না পাওয়ার অভিযোগ। যদি তার সিলেকশন হতো, তাহলে সে এ অভিযোগ করত না।
অভিযুক্ত আরেক অধ্যাপক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চের (নিটার) নারী সহকর্মীদের হেনস্থা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। তিনি প্রতিষ্ঠানটির সাবেক অধ্যক্ষ ও উপদেষ্টা। গত বছরের ২২ নভেম্বর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে ড. মিজানের বিভিন্ন অনিয়ম ও যৌন হয়রানি নিয়ে নিটারের ৩৭ জন শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দেন। তবে সে সময় ড. মিজানুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে এটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে জানান। তিনি বলেন, এগুলো উদ্দেশ্যমূলক, আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য এসব করা হয়েছে।
নীল দলের শিক্ষক প্যানেলের ৩৫ সদস্যের মধ্যে অভিযুক্ত দুই শিক্ষক থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুস সামাদ বলেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে কিন্তু প্রমাণিত হয়নি। তাই আমরা তাদের রেখেছি। অভিযোগ যে কেউ করতে পারে। নির্বাচিত হওয়ার পরও যদি অভিযোগটি প্রমাণিত হয় এবং শাস্তি হয় তাহলে তখন তারা থাকবেন না। সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম বলেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে সেটা তদন্তাধীন। এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। আগামী ২৪ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে ৩৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ মে প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ। এর মধ্যে কোনো দল চাইলে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির প্রতিনিধি হিসেবে সাধারণত কোষাধ্যক্ষ নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।