ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ও আকতার হোসেন বাদলের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উদ্যোগে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদৎ বার্ষিকী পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষ্যে কালো ব্যাজ ধারণ, দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা ও আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজা ও কাবাব কিং রেষ্টুরেন্টের মিলনায়তনে এই কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা। ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্র আর বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবর্তক। বাংলাদেশ যতদিন থাকতে ততদিন তিনি বাংলাদেশীদের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন। বক্তারা বলেন, বিএনপি কোন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে অবশ্যই নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এজন্য দেশ ও প্রবাসে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনমত গড়ে তুলতে হবে। খবর ইউএনএ’র।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ সভাপতি ও শহীদ জিয়ার শাহাদৎ বার্ষিকী পালন কমিটির আহবায়ক রাব্বী মোহাম্মদ খোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, মূলধারার রাজনীতিক ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আখতার হোসেন বাদল।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধামীর মশিউর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও শহীদ জিয়ার শাহাদৎ বার্ষিকী পালন কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি আশরফ উদ্দিন ঠাকুর। সভায় অতিথিবৃন্দ ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক দেলোয়ার-বাদল নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সমন্বয়কারী শাওন বাবলা, নিউইয়র্ক সিটি বিএনপি’র অন্যতম উপদেষ্টা মোহাম্মদ আরিফ, সভাপতি শামীম আহমেদ, সিনিয়র সহ সভাপতি এস এম শফি, সহ সভাপতি মোস্তফা কামাল, ব্রঙ্কস বিএনপি’র সভাপতি জীবন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মুক্তার আহমেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন সোহেল আহমেদ। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক সিটি বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। যৌথভাবে সভাটি পরিচালনা করেন নিউইয়র্ক সিটি বিএনপি’র সিনিয়র সহ সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন ও দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান রিপন।
এর আগে অধ্যাপক দেলোয়ার-বাদলের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ডাইভারসিটি প্লাজায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে শেখ হাসিনা সরকার বিরোধী শ্লোগান ছাড়াও দলের পক্ষে নানা শ্লোগান দেয়।
সভায় অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, জিয়ার রাজনীতিই দেশের চলমান সঙ্কট থেকে জাতিকে রক্ষা করতে পারে। কেননা, জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন, তিনি জনগণের জন্য রাজনীতি করেছেন, নিজের জন্য বা পরিবারের জন্য নয়। তাঁর জনপ্রিয়তায় ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে হত্যা করেন। তাঁকে হারিয়ে জাতি একজন দেশ প্রেমিক, সৎ রাষ্ট্রনায়ককে হারিয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দু:শাসন থেকে জাতিকে রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই। এজন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি’র নেতা-কর্মী সহ দেশ প্রেমিক সকল নাগরিকের ঐক্য প্রয়োজন।
আখতার হোসেন বাদল বলেন, জিয়ার নাম কোনদিন মুছে ফেলা যাবে না। শুধু বাংলাদেশ নয়, সৌদী আরবের পবিত্র মাটিতে লাগানো জিয়া ট্রি’র মাধ্যমে তিনি বিশ্বাসীর কাছেও বেঁচে থাকবেন। এটা মহান আল্লাহর দান। তাই আল্লাহ যাকে সম্মান দেন, তাঁর সম্মান কেউ কেড়ে নিতে পারে না। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, যমুনা সেতু নির্মাণের সময় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা হরতাল ডেকেছিলেন। তখন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কাউকে টুস করে পানিতে ফেলে দেওয়ার কথা বলেন নি, বা কাউকে পানিতে ডুবানোর কথা বলেননি। তিনি বলেন, আমাদের এখন একটাই দাবী সুষ্ঠু, অবাধ আর নিরপেক্ষ নির্বাচন। আমরা কোন দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচনে যাবো না।
গিয়াস উদ্দিন বলেন, জিয়ার হাতের ছোঁয়া আমার গায়ে। তাঁর নেতৃত্ব আর দেশপ্রেমই আমাকে বিএনপি’র রাজনীতিতে এনেছে। বাংলাদেশে তাঁর মতো মহৎ আর মহান নেতার প্রয়োজন। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার আহআন জানান।
মীর মশিউর রহমান বলেন, জিয়া ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার ঘোষক। তাঁকে অসম্মানিত করা মানে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মানিত কর। তিনি বলেন, আমরা ইতিহাসের সাক্ষী। একাত্তুরে জাতি যখন দিশেহারা, শেখ মুজিব যখন স্বেচ্ছায় পাকিস্তানীদের হাতে বন্দি, তখন জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতিকে পথ দেখান। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশে সম্মান পাইনি, এই প্রবাসে যারা তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মান জানান তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।