DMCA.com Protection Status
title="৭

বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি এবার আড়াই লাখ কোটি টাকা

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  রফতানির তুলনায় আমদানি বেড়ে যাওয়ায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৫৬ কোটি ডলার। যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। 

 বৃহস্পতিবার (২ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের (ব্যাল্যান্স অব পেমেন্ট) যে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে এ তথ্য উঠে এসেছে।  

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পণ্য বাণিজ্যে বাংলাদেশের ঘাটতি পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৫৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। বর্তমান বিনিময় হার হিসেবে (প্রতি ডলার ৯০ টাকা) যার পরিমাণ ২ লাখ ৪৮ হাজার ১২১ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮০১ কোটি ডলার। আর গত অর্থবছরের পুরো সময়ে এই ঘাটতি ছিল ২ হাজার ২৮০ কোটি ডলার। 

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমদানি বেশি হচ্ছে কিন্তু রফতানি ও রেমিট্যান্স কম আসছে। এখন ঘাটতি কমাতে হলে রফতানি ও রেমিট্যান্স বাড়াতে হবে। এছাড়া বিলাসী ও অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমাতে হবে। একইসঙ্গে আমদানির নামে কী আসছে তা তদারকি করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে রফতানি বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে একই সময়ে আমদানি বেড়েছে ৪১ দশমিক ৪২ শতাংশ। এই ১০ মাসে রফতানি থেকে দেশ আয় করেছে ৪ হাজার ১১০ কোটি ডলার। পণ্য আমদানির পেছনে ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ৮৬৭ কোটি ডলার।  চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে সেবা খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ৭৯৫ কোটি ডলার। যদিও সেবা খাতে দেশের ব্যয় হয়েছে ১১১৪ কোটি ডলার। সেবা খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩১৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল ২১৫ কোটি ডলার। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি হিসাব ভারসাম্যে (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স) বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে এই ঘাটতির (ঋণাত্মক) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে একই সময়ে ঘাটতি ছিল ১৬৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সামগ্রিক লেনেদেনে (ওভার অল ব্যাল্যান্স) ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৭১ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে এই সূচকে ৭৫০ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেশে ১ হাজার ৭৩০ কোটি ৮০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। গত অর্থবছরে একই সময় এসেছিল ২ হাজার ১১২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। 

এদিকে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) বেড়েছে। গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিলে ২৮৭ কোটি ১০ লাখ ডলারের এফডিআই পেয়েছিল বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা বেড়ে ৩৮৮ কোটি ২০ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। আলোচিত সময়ে নিট বিদেশি বিনিয়োগও আগের বছরের চেয়ে ৫৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়ে ১৮৬ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত বছর একই সময়ে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১২১ কোটি ডলার।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!