ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মিডনাইট হাসিনা সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, গুম-খুন, মানবাধিকার হরণসহ আইন-শৃঙ্খলার অবনিত ছিল। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ এখন ভালো অবস্থানে আছে।
বাংলাদেশ এখন ইউরোপের অনেক দেশের সঙ্গে তুলনা করার মতো অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, আগে বাংলাদেশে সন্ত্রাস ছিল, তাই সে সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু ইনিশিয়েটিভ নেয়া প্রয়োজন ছিল। এখন সেটা নেই। এ ব্যাপারে ইইউ সন্তোষ জানিয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াটলি স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, জাতীয় নির্বাচনসহ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদেরকে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানানো দেশের জন্য অকল্যাণ ডেকে আনবে। বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা থাকলে নিজেদের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। বাইরের দেশের কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করলে নিজের দেশকেই ছোট করা হয়।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক আছে, আমাদের দেশেও নির্বাচন বিতর্কের ঊর্ধ্বে না। যেসব দেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্যদের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ করে দিচ্ছে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আজকে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান কিংবা লিবিয়ার দিকে তাকালে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বিএনপি সংলাপ করে নালিশ দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। দেশের মানুষ সুখে আছে। যারা এই দেশটাকে চায়নি, যারা এদেশের উন্নয়ন সহ্য করতে পারে না। তারা বিদেশিদের কাছে ধরনা দিবে এটাই স্বাভাবিক।
রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, আমাদের সঙ্গে তাদের বিভিন্ন প্রকল্প আছে, সেগুলো নিয়ে আলাপ হয়েছে। গ্রামীণ আদালত সক্রিয়করণ নামে একটি প্রকল্প রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশ আমাদের ফাইন্যান্সিয়াল এবং টেকনোলজিক্যাল সহায়তা দিয়ে থাকে। কয়েকটি জেলায় এটি পাইলট প্রজেক্ট আকারে চলছিল। এখন আমরা এই প্রকল্পটি সারা দেশে চালু করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি।
সেখানে তারা অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশে ২৮ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তিনি বলেন, গ্রামে ছোটখাটো সমস্যা হলেই মানুষ মামলা-মোকদ্দমা করতে যায়। এতে উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক সময় ব্যয় হয়, কোর্টের ওপর চাপ পড়ে। গ্রাম আদালত হলে বিষয়গুলো সেখানেই সমাধান করা যাবে। মানুষ উপকৃত হবে। আমরা সারা দেশে একসঙ্গে এই ভিলেজ কোর্ট চালু করবো। এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলে শুকনো সময় পানি স্বল্পতা থাকে। সুপেয় পানির খুব অসুবিধা হয়। সে কারণে এখানে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে পরিচালিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে লবণাক্ত পানিকে নিরাপদ ও সুপেয় করে উপকূলীয় এলাকার স্কুল ও বাসাবাড়িতে সরবরাহ করার জন্য আমরা একটি প্রকল্প তৈরি করছি। এই প্রকল্পে তারা অর্থায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।