মিশরের মিনিয়া শহরে গত বছরের আগস্ট মাসে, সেনাবাহিনীর কর্তৃক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ মুরসির উৎখাতের পর পুলিশদের হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ৬৮৩ জন মুরসিপন্থী বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হয়েছে আজ সোমবার, গণমাধ্যমের সুবাদে এ সংবাদ পৌঁছে গেছে বেশ আগেই। বিবিসির খ্যাতনামা সমর সাংবাদিক ওরলা গেরিন আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের সঙ্গে রায় ঘোষণার মূহূর্তে আলাপ করে তাদের ভেতরকার কথা তুলে এনেছেন যাদের আত্মীয় পরিজনের ওপর এ রায় বর্তেছে, সেখান থেকেই উঠে এসেছে কিছু বিস্ময়কর প্রতিক্রিয়া।
ওরলা গেরিন এক প্রবীণের সঙ্গে কথা বলেন যিনি তার ভাইকে নির্দোষ ও পরিস্থিতির শিকার দাবি করছেন। অপর এক প্রবীণা জানান, তার ছেলের বয়স মাত্র ১৫ এবং তার বিরুদ্ধেও মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হয়েছে। অপ্রাপ্তবয়স্কের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণায় আত্মীয় ও উপস্থিতদের নিষ্ফল ক্ষোভের প্রকাশটাই বেড়েছে শুধু, যেহেতু এ ছাড়া সেই মুহূর্তেই আর কিছুই করণীয় ছিল না।
ওরলা গেরিনের সঙ্গে আলাপ হয় আরেক নারীর, যে নারী দাবি করেছেন, তার ৩ বছর আগে মৃত ছেলেও গত বছর পুলিশের ওপর হামলার দায়ে অভিযুক্ত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের একজন, যেখানে পুলিশের হাতেই সেদিন মরেছে শত শত মুরসিপন্থী। এ ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর উপস্থিত মানুষেরা পুরো দণ্ডদান প্রক্রিয়াটিকেই ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করতে থাকেন।
সোমবার আল মিনিয়া আদালতের ঘোষিত ৬৮৩ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রায় ৫০ জনের জন্যে মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল থাকবে বলেণ নিশ্চিত করেছে আদালত, অবশিষ্টরা রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করতে পারবেন। এর সুবাদে রায় পরিবর্তত হওয়ার সুযোগ আছে। যেমনটা ঘটেছে মার্চ মাসে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতদের ক্ষেত্রে।
চলতি বছরের মার্চ মাসে একই অভিযোগে অপর এক রায়ে ৫২৯জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছিল। তাদের মধ্য হতে পুনরায় আপীলের ভিত্তিতে ৪৯২ জনের শাস্তি লঘু করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হয়েছে, অবশিষ্ট ৩৭ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তবে ঐ ৩৭ জন কারা তাদের নাম এখনও ঘোষণা করা হয়নি, উপস্থিত জনতার মধ্যে তা নিয়েও উদ্বিগ্নতা কাজ করছে।
এক দণ্ডপ্রাপ্তের আত্মীয় প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, ন্যায়বিচার কি হারিয়ে গেছে?