ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সদ্য নির্বাচনে জেতার পরে এমপি আরাফাত বাংলাদেশের অত্যন্ত ক্ষমতাশালী সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই) কতৃক অপহৃত এবং মারধরের শিকার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অতিপ্রিয় গবেষক ও প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ট বন্ধু মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে ঢাকা-১৭ নির্বাচনী এলাকার উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী করেন শেখ হাসিনা।
তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বি ছিল বগুড়ার এক সাধারণ যুবক আশরাফুল আলম (হিরো আলম নামে পরিচিত)। নির্বাচন শেষে বেসরকারিভাবে আরাফাতকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
কিন্তু ফলাফল হাতে পাওয়ার পরে আরাফাত দেখতে পান ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় তিনি কোনো ভোটই পাননি। এতে প্রচন্ড বিরক্ত এবং উত্তেজিত হয়ে তিনি ফোনে কাউকে গালিগালাজ করতে থাকেন এবং বলেন, “বঙ্গবন্ধুর ঘাতক এই আর্মি আমাকে ভোট দিবে কেনো? জননেত্রী তাদের এত কিছু দেয়ার পরেও এই দশা! শুয়ারের বাচ্চাদেরকে আমি দেখে নেব।”
প্রতিরক্ষা গোয়েন্দার নিয়মিত টেলিফোন মনিটরিংয়ে ধরা পড়ে আরাফাতের এই গালিগালাজ। ডিজিএফআই প্রধান মেজর জেনারেল হামিদের নির্দেশে তৎক্ষনাৎ একটি টিম ছুটে যায় আরাফাত কে পাকড়াও করতে।
সোমবার ১৭ জুলাই মধ্যরাতের পরে আরাফাতকে তুলে এনে কচুক্ষেতের ১৪ তলা ভবনে ঢোকানো হয়। হাত মুখ বেঁধে অন্ধকার ঘরে বেধরক পেটানো হয় তাকে, ইলেকট্রিক শক দিয়ে কথা বের করা হয়। আর্মিকে গালিগালাজ করার কারণে উপযুক্ত শিক্ষা দেয়া অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে ভিকটিম। পরে ডাক্তারটি এনে চিকিৎসা শেষে ভোররাতে তাকে বাড়িতে পৌছে দেয় সংস্থাটি।
আরাফাতকে তুলে নেয়ার পর একটি মাধ্যম মিডনাইট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করে। তবে তিনি অপহৃত আরাফাতেকে রক্ষায় কোন চেষ্টাই করেননি।
কারণ হিসাবে সূত্র জানায়,বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর ক্ষোভ প্রকাশ নিয়ে তিনি দ্বিমত পোষণ করার সাহস করেননি।
বলা হয়ে থাকে, ১৯৭৪ সালে সেনাবাহিনীর অফিসার এবং শেখ পরিবারের ঘনিষ্ট মেজর ডালিমের স্ত্রীকে অপহরণের পর হট্টগোল হলে তার পিতা প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিব সেনাবাহিনীর ক্ষোভের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে কয়েক ডজন সেনা অফিসারকে চাকরিচ্যুত করেছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে ঘটে ১৫ আগস্টের ক্রাকডাউন এবং সপরিবারে শেখ মুজিব হত্যাকান্ড।
শাসক দলের তরুণ এমপিকে প্রথম রাতেই পেটানো নিয়ে নানা আলোচনা ও গুঞ্জন শুরু হয়েছে দেশময়। অনেকেই এটাকে শেখ হাসিনার ক্ষমতা হারানোর আগাম আলামত হিসাবে দেখছেন।