ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভরাডুবির জেরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর তুমুল সমালোচনা করেছেন পরাজিত প্রার্থীরা। নির্বাচনে এমন ভরাডুবির জন্য জাপা চেয়ারম্যান, মহাসচিব ও চেয়ারম্যানের পত্নীকে দায়ী করেন জাপা নেতারা। জিএম কাদের ও চুন্নুকে বাটপার, প্রতারক বলেও গালি দেন পরাজিত প্রার্থীরা।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সভা শুরু হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলের কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা-৪ থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা।
উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহানগর উত্তরের সভাপতি শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাবেক এমপি ইয়াহয়া চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, আমানত হোসেন খান, যুগ্ম মহাসচিব আমির উদ্দিন আহমেদ ডালু, ফখরুল আহসান শাহজাদা, আব্দুল হামিদ খান ভাসানি, হাসান ইফতেখার, মিজানুর রহমান মিরু, সাহিন আরা চৌধুরী রিমা, সুজন দে, শাহনাজ পারভিন প্রমুখ।
জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, ভোটের আগে ২৩ জন প্রার্থী আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তাদের আক্ষেপ, ক্ষোভ বা দুঃখ যে, আমরা নমিনেশন পেপার সাবমিট করে নির্বাচনী প্রচারের কাজে ব্যস্ত। ঢাকায় আসলাম মহাসচিব, চেয়ারম্যান হয়তো আমাদের কিছু দেবেন। এ কারণে আমরা ঢাকায় এসেছি। আমি তাদের বক্তব্য শুনেছি। ঢাকায় আমাকে ছাড়া তারা আর কাউকে পাননি। প্রার্থীরা বলেছেন, আমরা নির্বাচন থেকে সরে আসছি। আমাদের যা ছিল খরচ করেছি। আমাদের যদি কিছু সহযোগিতা না করেন, তাহলে আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
জাপা মহাসচিব টাকা দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জানিয়ে সেন্টু বলেন, আমি তাকে বললাম যাই পান কিছু কিছু দেন। মহাসচিব বললেন, টাকা পেয়েছি, কিন্তু অল্প। উনি কী করলেন, চেয়ারম্যানের স্ত্রীর কাছে একটা অ্যামাউন্ট দিয়ে চলে গেলেন নির্বাচনী এলাকায়। কোনো প্রার্থীকে তিনি কিছু বলেননি। মহাসচিব বললেন, সেন্টু এটা শেরীফা কাদের দেখবেন।
তিনি বলেন, আপনারা সমঝোতা করলেন। সরকার ২৬টা সিট তুলে দিয়েছে। সরকার কোনো কৃপণতা করেনি আমার জানা মতে। সরকার সব কিছু আপনাদের ভরপুর দিয়েছে, কোনো কিছু বাকি রাখেনি। অর্থ দিয়েছে, সিটও দিয়েছে। সিট আপনারা ২৬টা আনছেন, এটা আপনাদের ব্যর্থতা। সরকারের কোনো ব্যর্থতা নেই। সরকার আপনাদের ভরপুর দিয়েছে। আমরা জানি, বাবলা ভাই জানে, খোকা সাহেব জানে।
সেন্টু দাবি করেন, যখনই শেরীফা কাদেরের সিটটা কনফার্ম হয়নি, জিএম কাদের বললেন আমি ভোটে যাবো না। যেই তার স্ত্রীর (শেরীফা কাদের) সিটটা দিয়ে দিয়েছে, সে (জিএম কাদের) দৌড়ায়ে চলে গেছে।
জিএম কাদেরকে উদ্দেশ্য করে সাবেক এমপি ও সিলেটের প্রার্থী ইয়াহয়া চৌধুরী বলেন, আপনি গণতন্ত্র শিখিয়েছেন, আপনার মধ্যে গণতন্ত্র নেই। আপনি স্ত্রীর জন্য ফিরোজ, বাবলা, খোকা, পীর ফজলু, আতিক, ভাসানিসহ নয়টি সিট কোরবানি দিয়েছেন। সমাঝোতার আসনের জন্য চেয়ারম্যান নিজের স্ত্রী, নাতি আর মেয়ের ভাসুরের জন্য দৌড়াদৌড়ি করেছেন।
সিরাজগঞ্জের মুখতার হোসেন বলেন, রক্তমাংস, দোকানপাট বিক্রি করে নির্বাচন করেছি। স্বতন্ত্র ও নৌকার লোকদের হামলার মুখে জীবন যায়, কিন্তু দলের কোনো সহযোগিতা পাইলাম না। একটু দেখা পর্যন্ত দিলেন না। তারা আমাদের বরাদ্দকৃত টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন।