ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ হাসানুল হক ইনু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য। তার মন্ত্রী আর সংসদ সদস্য হওয়াটা আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার দয়ার দান। শেখ হাসিনা চেয়েছেন, তাই তিনি এমপি হয়েছেন, মন্ত্রীর পদ বাগিয়েছেন। ৭ জানুয়ারির ডামি প্রার্থীর নির্বাচনে তার প্রতি ওপরমহলের আশির্বাদ ছিল না, ফলে ওই পাতানো নির্বাচনে গো হারা হেরেছেন তিনি।
নির্বাচনে হারার পর থেকে তিনি সরকারের শীর্ষ মহলের নজর কাড়তে ফের সেই পুরোনো পথ বেছে নিয়েছেন। অর্থাৎ সমালোচনার মাধ্যমে সরকারের মধ্যে কিছুটা বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, কোনোভাবে মুখ বন্ধ করার মতো একটা কিছু পাওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত ইনু।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বরই আর পেয়ারা দিয়ে ইফতার সম্পন্ন কথা বলেছেন। মন্ত্রীর এ বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানামুখী সমালোচনা আর হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে শিল্পমন্ত্রীকে একহাত দেখানোর পাশাপাশি সরকারের সমালোচনায় স্বভাবসুলভ সরব হাসানুল হক ইনু। তার বক্তব্যের চৌম্বক অংশ নিয়ে আজকের রাজনীতির কথকতা।
‘গরিব মানুষ বরই খাবে। আর তুমি আঙুর আর খেজুর খাবা, তা হবে না, তা হবে না।’
‘একটু আগে মোবাইলে দেখলাম এক মন্ত্রী বলেছেন, রোজার সময়ে খেজুর আর আঙুর দিয়ে ইফতার করেন না। বরই দিয়ে করেন। আল্লাহ কী বলব, বলেন। আজকে নিত্যপণ্যের বাজারে মানুষ জর্জরিত। আপনি মানুষের সঙ্গে ঠাট্টা-মশকরা করছেন।’
রাজশাহীতে এক যুব সমাবেশে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে ইনু হেসে বলেন, ‘দুঃখে রাগ হলো, বুঝলেন না। তারপর আবার মনে করতে পারেন ইনু সাব ভোটে হারছে, এ জন্য রাগ করতেছে। না ভাই, আমি যখন মন্ত্রী ছিলাম, তখন মন্ত্রিপরিষদে এভাবে কথা বলেছি আঙুল তুলে। সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় সংসদে যা অবস্থা, তা-ই বলেছি। কোনো রাগের ব্যাপার নাই।’
ইনু বলেন, ‘তাদের (নিম্ন ও মধ্যবিত্ত) পেটের জ্বালার যন্ত্রণা বাড়ছে। তেল, নুন, পেঁয়াজ, চিনি, আদা-রসুন, মরিচ—যেটাতেই হাত দিই, হাত পুড়ে যাচ্ছে। সকালে এক দাম, বিকেলে আরেক দাম। এটা তো অর্থনীতি না। এই গরিব, মধ্যবিত্ত মানুষদের জীবনে স্বস্তি আসেনি।’
সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রীরা চিৎকার করছেন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। কিন্তু দাম কমছে না, বেড়েই চলেছে। তাহলে ব্যর্থ কে? প্রশাসন ব্যর্থ। কেন তারা কথা শুনছে না? এটা কি সিস্টেমের দোষ, নাকি মুক্তবাজার অর্থনীতির দোষ? নাকি যারা দাম বাড়াচ্ছে, তারা সরকারি ছায়ায় বসবাস করে, এ কারণে তাদের গলা টিপে ধরা সম্ভব হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী বলার পরও দাম কমে না। অস্বাভাবিক ব্যাপার! এত শক্তি, এত সাহস, এটা কী করে সম্ভব?’
দায়িত্ব পেলে দুই ঘণ্টার মধ্যে পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে পারবেন দাবি করে হাসানুল হক বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ থেকে একটি ট্রাক ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে হলে ১৪ জায়গায় চাঁদাবাজি। হিসাব করে দেখেছি, ছয় হাজার টাকা। এটা সবার ওপরে পড়ে। ছয় হাজার টাকার চাঁদা বন্ধ করতে দুই ঘণ্টা সময় লাগে। দেন আমাকে ক্ষমতা, আমি দুই ঘণ্টার মধ্যে চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেব।’