ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা জানান খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে গুলশানের বাসায় (ফিরোজা) ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
জাহিদ হোসেন বলেন, অপেক্ষাকৃত সুস্থতাবোধ করার কারণেই উনাকে (বেগম খালেদা জিয়া) বাসায় আনা হয়েছে। উনি ৩০ তারিখের তুলনায় এখন অপেক্ষাকৃত একটু সুস্থতাবোধ করছেন। উনি আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে দেশবাসীসহ সবাই কাছে সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতাল সিসিইউতে ভর্তি করার পর দ্রুততার সঙ্গে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। যেগুলো বাসায় করা সম্ভব হয় না। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ৩১ তারিখেও পরীক্ষা করেছেন। উনার চিকিৎসার যে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তার প্রত্যেকটি মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা গ্রহণ করেছেন। সেই কারণে আপনাদের (সাংবাদিক) এবং দেশবাসীর দোয়া চেয়েছেন।
আল্লাহর রহমতে সোমবার থেকে উনি একটু একটু সুস্থতাবোধ করেন। পরবর্তীতে দেশে-বিদেশে উনার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের নিয়ে দুটি বোর্ড মিটিং হয়।
ডা. জাহিদ বলেন, মিটিংয়ের পর মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশক্রমে উনার চিকিৎসার যেসব পরিবর্তন করা প্রয়োজন, সেগুলো অব্যাহত থাকে। তবে চিকিৎসার খুব বেশি পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়নি। কিছু কিছু চিকিৎসা যেগুলো বাসায় দেয়া সম্ভব না, সেটা হাসপাতালে দেয়া হয়। দেয়া পরে অসুস্থতার মাঝেও উনি অনেকটাই কিছুটা স্বস্তিবোধ করেন। সেজন্য উনার শারীরিক সুস্থতা যেটুকু হয়েছে, সেটা হসপিটালের পরিবেশের কারণে আরও বেশি খারাপের দিকে না যায়, সেজন্য মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে উনার চিকিৎসা বাসাতেই সার্বক্ষণিকভাবে চলবে।
গত শনিবার রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে নিয়েই মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় খালেদা জিয়াকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।
সর্বশেষ গত ১৩ই মার্চ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। ওই সময় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। ভর্তির একদিন পরেই ১৪ মার্চ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরেন তিনি।
গত বছরের ৯ই আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ই জানুয়ারি বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সে সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন তিনি। করোনা মহামারির সময় ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে তাকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।