DMCA.com Protection Status
title="৭

সংসারের ব্যয় মেটাতে অভ্যাস বদলেছে মানুষ

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সবজির সর্বনিম্ন মূল্য ৫০ টাকা এবং মাছ বা মুরগির সর্বনিম্ন মূল্য প্রতিকেজি ২৩০ টাকা হওয়ায় কাঁচাবাজারে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন চাকরিজীবী নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তদের বড় একটি অংশ।

বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে ও ভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদক জানতে পেরেছে, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে মানুষ প্রোটিনের ব্যবহার কমিয়ে দিচ্ছে।

মাসিক ৫২ হাজার টাকা বেতনের চাকরিজীবী তবিবুর রহমান রাজধানীর তেজগাঁওয়ের তেজকুনিপাড়ায় পরিবারের পাঁচ সদস্যকে (স্ত্রী, দুই সন্তান ও মা) নিয়ে থাকেন।

শুক্রবার(২৪ মে) কারওয়ান বাজারে আলাপকালে তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের পর থেকেই মুরগি, গরুর মাংস ও মাছের দাম বেড়ে যাওয়ায় তিনি এগুলো কিনছেন না। বেতন দিয়ে সংসারের খরচ চালাতে হলে তাকে প্রাণিজ ও মাছের প্রোটিন প্রায় পুরোপুরি বাদ দিতে হয়।

এছাড়া ইউটিলিটি বিল, বৃদ্ধা মায়ের ওষুধের খরচ এবং তার দুই সন্তানের পড়াশোনার খরচও বেড়ে গেছে। তাই সংসারের খরচ মেটাতে খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস পরিবর্তন করতে বাধ্য হন তবিবুর।

প্রোটিনের জন্য পাঙ্গাশ, ডিম ও অন্যান্য কম দামের জিনিসের ওপর নির্ভর করছেন তিনি। তবিবুরের মতো বেশ কয়েকজন চাকরিজীবীও তার মতো একই অভিজ্ঞতার কথা জানান।

তবে রাজধানীর কাঁচাবাজারে শুক্রবার কাঁচা মরিচ, সবজি, ডিম ও মুরগির দাম ছিল বেশ ঊর্ধ্বমুখী।

কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

চলতি মাসের শুরু থেকেই ডিমের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শুক্রবার রাজধানীতে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা চলতি মাসে প্রতি ডজনে ৩০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।

দেশি পালিত মুরগির ডিম প্রতি হালি (৪ পিস) ৮৫ থেকে ৯০ টাকা এবং হাঁসের ডিম প্রতি হালি ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি ও  সোনালী(পাকিস্তানি নামে পরিচিত) মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। আকার ও মান ভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। এ ছাড়া সোনালী মুরগির দামও বেড়েছে এবং আকার ও মান ভেদে প্রতি কেজি ৩৬০ থেকে ৩৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

একইভাবে প্রতি কেজি কক মুরগি ৩৭০ থেকে ৩৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, দেশি (দেশি) মুরগি ৬৭০ থেকে ৭৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা জানান, মুরগির খাবার ও বাচ্চার দাম বাড়ায় বেড়েছে মুরগির দাম। এছাড়া চলমান তাপপ্রবাহে মুরগির খামারেও প্রভাব পড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে দামেও।

মান ভেদে শুক্রবার প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায়, সপ্তাহের অন্যান্য দিনের চেয়ে কেজিতে বেড়েছে  ৩০ টাকা। মান ভেদে খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১৮০ টাকায়, যা কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে।

শুক্রবার কারওয়ান বাজারের মাছের বাজারে ৪৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা এবং এক কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায়।

আকার ও মান ভেদে রুই ও কার্পের মতো মাছ ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার নদীর ছোট মাছ বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে গত বছরের তুলনায় এবার সবজির দাম বাড়তি হারে স্থিতিশীল রয়েছে। এই বাড়তি দামের জন্য সার্বিক মূল্যস্ফীতিকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার প্রতি কেজি বেগুন, ঢেঁড়স, সজিনা, সুতো শিম, করলাসহ সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় স্থিতিশীল ছিল। মৌসুম শেষ হওয়ায় বেড়েছে টমেটোর দাম। ভালো মানের টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।

করলা ও বেগুন প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং লাউ ও ফুলকপি প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মান ভেদে দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, রসুন  ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, আদা ২০০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

চালসহ চাল, আটা, ময়দা, দুধ, সয়াবিনসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!