ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নিজেদের ৯ দফা দাবিতে অনড় থেকে তা আদায়ের লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
আজ বুধবার (২৪ জুলাই) দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫২ সমন্বয়কের যৌথ বিবৃতি এই কর্মসূচি দেওয়া হয়। তাদের নতুন কর্মসূচি হলো আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দেশব্যাপী গণসংযোগ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনের স্ট্রিম রোলার চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় তিন শতাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। কয়েকজন সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ককে গুম করে ফেলা হয়েছে।
সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদের পাঠানো ওই যৌথ বিবৃবিতে আরও বলা হয়, জানালার পাশে পড়ার সময় কোমলমতি শিশুকে সামিরকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই শুধুমাত্র আদালতের রায় ও প্রজ্ঞাপন দিয়ে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে সরকার দেশব্যাপী চালানো গণহত্যার দায় এড়াতে পারে না। আমাদের ৯ দফা দাবি এখন গণমানুষের দাবীতে পরিণত হয়ছে। এটি এখন গোটা বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির সনদ৷ ৯ দফা দাবি আদায়ে আমাদের নতুন কর্মসূচি ২৫ জুলাই দেশব্যাপী গণসংযোগ। ৯ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রসমাজের আন্দোলন চলমান থাকবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবি হলো:
১। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে ।
২। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে মন্ত্রীপরিষদ এবং দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে।
৩। ঢাকাসহ যত জায়গায় শহিদ হয়েছে সেখানকার ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।
৪। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টরদের পদত্যাগ করতে হবে।
৫। যে পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের উপর গুলি করেছে, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ যে সকল সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের উপর নৃশংস হামলা পরিচালনা করেছে এবং পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে তাদেরকে আটক করে এবং হত্যা মামলা দায়ের করে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার দেখাতে হবে।
৬। দেশব্যাপী যে সকল শিক্ষার্থী ও নাগরিক শহিদ ও আহত হয়েছে তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদাণ করতে হবে ।
৭। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসী সংগঠনসহ সকল দলীয় লেজুড়ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে ছাত্রসংসদকে কার্যকর করতে হবে।
৮। অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হলসমূহ খুলে দিতে হবে।
৯। কোটা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কোন ধরনের হয়রানি করা হবে না মর্মে অঙ্গীকার করতে হবে।