DMCA.com Protection Status
title="৭

জামায়াত নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক : বিএনপি

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে নিন্দনীয়, অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক উল্লেখ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলেছে, ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার দায়ে সরকারের পদত্যাগের দাবি ধামাচাপা দিতে নতুন বিতর্ক, নতুন ইস্যু সামনে আনা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১:আগস্ট) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন। তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে ইস্যু বানানোর পুরাতন কার্ড নতুন করে খেলে আওয়ামী লীগ জনদৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে পারবে না। শত শত ছাত্র, কিশোর, যুবক, শিশুসহ জনতার রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে রাজনৈতিক দল বা সংগঠন করার অধিকার দেওয়া আছে। এই সাংবিধানিক অধিকার বলে তারা যেকোনো রাজনৈতিক দল, সংগঠন করতেই পারেন। আন্তর্জাতিক মানের ন্যায়সংগত ও বিশ্বাসযোগ্য, গ্রহনযোগ্য, নিরপেক্ষ কোনো তদন্ত ছাড়াই কোনো রাজনৈতিক দলকে অপবাদ দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা অন্যায়। এটি সংবিধান সম্মত নয়।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গণহত্যা, নৃশংসতা, ফাসিবাদী কায়দায় নির্মম-নির্দয় দমন নিপীড়ণের জন্য সরকার দেশ-বিদেশে যখন তীব্র ক্ষোভ, ঘৃণা, চাপের মুখোমুখি, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বন্ধু রাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যম যখন সরকারকে জবাবদিহি করতে বলছে, দেশে দল মত নির্বিশেষে ছাত্র, অভিভাবক, শিক্ষক, শিল্পী, সাংবাদিক, আইনজীবী, যুবক, নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ প্রতিবাদ, ধিক্কার জানিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, বাংলাদেশের ঘরে ঘরে এই ফ্যাসিষ্ট সরকারের পদত্যাগের দাবি উচ্চারিত হচ্ছে তখন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন ও চাপে রাখতে বিশ্বাসযোগ্য কোনো তদন্ত ছাড়াই নিজেদের দায় দায়িত্ব বিরোধী দলের ওপর চাপানোর অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এসব হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেরা পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি আরো জটিল ও সংঘাতময় করে তার দায় বিরোধী দলের ওপর চাপানোর আশঙ্কা করছে দেশবাসী। অতীতেও তারা নিজেরা সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করেছে। চলমান আন্দোলনেও করছে। বিরোধী দল, মতকে নির্মূল করে বিরোধী দল শূন্য করার সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে রাষ্ট্রঘাতি আওয়ামী লীগ তা ভবিষ্যতেও করতে পারে। এজন্য দেশবাসী ও রাজনৈতিক দলসহ সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানাই।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী কালেও ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী কার্যকলাপ, দুর্নীতি, লুটপাট, লাল বাহিনী, নীল বাহিনী, রক্ষী বাহিনীসহ বিভিন্ন পেটোয়া বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতনের বিরুদ্ধে তৎকালীন বিরোধী দল সমূহের আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে আওয়ামী লীগ সব রাজনৈতিক দলকে আইন করে নিষিদ্ধ করে এক দল- বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠন করেছিলো। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র সংগঠনকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, বাক-ব্যক্তি-সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক গণঅধিকারসমূহ, স্বাধীনভাবে সংগঠন করার স্বাধীনতা এবং আইন বিভাগের স্বাধীনতাও হরণ করে এক ব্যক্তির দু:শাসন কায়েম করা মহান স্বাধীনতার মূল আকাঙ্খায় কুঠারাঘাত করা হয়েছিলো।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে জাসদ সৃস্টি হয়েছিলো, সেই জাসদকে নির্মূল, ধ্বংস করতে হত্যাযজ্ঞ ও নির্মমভাবে দমন নিপীড়ন চালিয়েছিলো। এই জাসদকে আওয়ামী লীগ একসময় তাদের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট মরহুম শেখ মজিবর রহমানের হত্যার প্রেক্ষাপট রচনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করতো, সেই জাসদের একেক সময় একেক ভগ্নাংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ এক সময় ১৫ দলীয়, ১৪ দলীয় জোট করেছে, সরকার গঠন করেছে, বর্তমানেও তাদের জোট আছে। একসময়ে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সাথে আওয়ামী লীগের সখ্যতাও সর্বজনবিদিত। এক সময় তারা পরস্পরের সঙ্গী ছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ জামায়াত আওয়ামী লীগের ফ্যসিস্ট সরকারের বিরোধিতা করছে। এখন তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে নেই বলে তাদের ভাষায় জঙ্গি হয়ে গেছে। কোন রাজনৈতিক দল জঙ্গি তা দেশবাসী ভালো করেই জানেন।  বাংলাদেশে আজ জঙ্গির সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!