সাত খুনের ঘটনায় তৃতীয় দফার শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা সার্কিট হাউজে গণশুনানি চলছে।প্রথম দু দফায় সাক্ষী দেবার মতো সাহসী লোকের অভাব হলেও আজ পরিস্থিতি আশাব্যাঞ্জক।
বেলা পৌনে ১১টায় গণশুনানি শুরু হয়। ইতিমধ্যে সেখানে সাক্ষ্য দিতে কয়েশ’লোক উপস্থিত হয়েছেন। তবে প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, যারা ঘটনার প্রকৃত প্রত্যক্ষদর্শী শুধু তারাই সাক্ষ্য দেবেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা সার্কিট হাউজে গণশুনানিতে ৮৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহন করা হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ সাক্ষগ্রহণ চলে। এ সময় নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সার্কিট হাউজে তদন্ত কমিটি ৫টি টিমে বিভক্ত হয়ে গণশুনাতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ করছেন। এ সময় জেলা আইনজীবী সমিতির ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল তদন্ত কমিটির সঙ্গে দেখা করেন। পরে আইজীবী সমিতির পক্ষে অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
র্যাবকে জিঞ্জাসাবাদ করা হবে কী না সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটির প্রধান মামুনুর রশিদ মণ্ডল জানান, তদন্তের স্বার্থে যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এদিকে সোমবার সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা সার্কিট হাউজে মাত্র একজন ব্যক্তি সাক্ষ্য দিয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত কমিটি তার নাম প্রকাশ করেনি।
এদিকে তদন্ত কমিটির সঙ্গে দেখা করে মৌখিকভাবে খুনীদের পক্ষে কোনো সাক্ষ্যগ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা।
উল্লেখ্য, সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্যু-মোটো ক্রিমিনাল রুল নম্বর ১৮৪০৩/১৪ মামলার ৫ মের আদেশ মোতাবেক ৭ জনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ বিষয়ে ৭ মে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহজাহান আলীর মোল্লার নেতৃত্বে ৭ সদস্যের ওই তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার উদ্ধারস্থল ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
কমিটির অপর সদস্যরা হলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের উপ সচিব আবদুল কাইয়ুম সরকার ও আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, আইন ও বিচার বিভাগ ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মোস্তাফিজুর রহমান ও মিজানুর রহমান খান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের উপসচিব শফিকুর রহমান ও সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার।
কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে, কমিটি গণতদন্তের মাধ্যমে অপহরণের পর হত্যার সঙ্গে প্রশাসনের কোনো সদস্য বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা ও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা উদঘাটন করবে। অপহরণের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অপহৃতদের জীবিত উদ্ধারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো অবহেলা বা ইচ্ছাকৃত গাফিলতি ছিল কিনা তা নির্ণয় করবে।
সেই সঙ্গে কমিটি আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগে প্রতিবেদন দাখিল করবে।