ভারতের নির্বাচনে বিজেপির নিরঙ্কুশ বিজয়ে নতুন মোদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের মনস্তাত্বিক পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ফারুক চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।
একই সঙ্গে ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতিবাচক মনোভাব ইতিবাচকের পরিণত হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে বাংলাদেশকে। এতদিন তিনি গুজরাট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নেতিবাচক ও সাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষণ করে এলেও নানামুখি চাপের কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তা করতে পারবেন না। তাছাড়া নিজের ইমেজ পুনরুদ্ধারেও সজাগ থাকবেন মোদি। আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে হবে বাংলাদেশকে।বিজেপি ও মোদী বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রেখে বাংলাদেশের জনগনের কাছে আসার সুযোগ নিতে পারেন।
তবে কী ধরনের মনস্তাত্বিক পরবির্তন আসছে সেজন্য কমপক্ষে দুই মাস অপেক্ষা করতে হবে বলেও মনে করেন ফারুক চৌধুরী।
শনিবার দৈনিক প্রথম বাংলাদেশের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে তিনি আরো বলেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টির নিরঙ্কুশ বিজয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে মনস্তাত্বিক পরিবর্তন আসতেই পারে। তবে সেটা ইতিবাচকও হতে পারে। সেদিক বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকারকেই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’
বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকারের কী ধরনের সম্পর্ক স্থাপিত হয়, সে বিষয়টি বাংলাদেশকে খুব সুক্ষ্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ দেন সাবেক এ কূটনীতিক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন, ‘ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার নেগেটিভ ইমেজ দূর করার জন্য এশিয়ার দেশগুলোর রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও উন্নয়নে চেষ্টা করবে। এবারের নির্বাচনে বিজেপি এত বেশি আসন পেয়েছে যা বহুবছর ধরে ছিল না। এত আসন পাওয়ায় বিজেপিকে অন্য কোনো দলের ওপর নির্ভর করতে হবে না। নরেন্দ্র মোদি নেতিবাচক ইমেজ দূর করে এখন দায়িত্বশীল হবার সুযোগটি কাজে লাগাবেন।’
সীমান্তে বিনা বিচারে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধে বিজেপির বিরোধিতা কমিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আরো বেশি উদ্যোগী হওয়ার কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, কংগ্রেসের সাথে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। কংগ্রেসও বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ ছিল। কিন্তু বিজেপির সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্কও নেই বর্তমান সরকারের। এ কারণে বিজেপি নির্বাচিত হওয়ায় ভারত-বাংলাদেশ মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ড. ইমতিয়াজ।