চট্টগ্রামে অপহরণকারীর পক্ষ নিয়ে সমঝোতার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গত রবিবার রাতে নগরীর আগ্রাবাদ চৌমুহনী এলাকায় অপহরণের চেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার বাদী গোলাম রব্বানী মুন এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আমাদের বারবার সমঝোতার চাপ দেয় পুলিশ। কিন্তু আমরা মামলা করতে অনড় ছিলাম। তাই অনিচ্ছে সত্ত্বেও রবিবার রাত দশটার ঘটনায় সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটায় মামলা (নং – ১৬)নিয়েছে ডবলমুরিং থানা পুলিশ। তারপরও আসামিকে আদালতে না পাঠিয়ে পুলিশ চিকিৎসার কথা বলে এক মাসের জন্য চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
প্রসঙ্গত: গত রবিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে হালিশহরের ব্যবসায়ী গোলাম রব্বানী মুন পাঠানটুলী এলাকায় ইব্রাহীম অটো টায়ার নামক প্রতিষ্ঠানে ডেলিভারি দেওয়া মালের টাকা তুলতে যান। মুন জানান, সেই সময় একটি প্রাইভেট কার ও একটি মাইক্রেবাস এসে তার গতিরোধ করে। প্রাইভেট কার থেকে নেমে আসেন এক ব্যক্তি। নিজেকে র্যাব কর্মকর্তা মেজর আরিফ আহমেদ পরিচয় দিয়ে মুনকে বলেন, ‘তোর নামে ওয়ারেন্ট আছে। আমরা র্যাবের লোক’। এই বলে তাকে জোর পূর্বক গাড়িতে তোলার জন্য টানা হ্যাঁচড়া করতে থাকেন। মুন ডাকাত ডাকাত বলে চেঁচিয়ে উঠলে আশপাশের ব্যবসায়ী ও পথচারীরা ছুটে আসেন। এসময় মাইক্রোবাস নিয়ে পাঁচ যুবক পালাতে সক্ষম হলেও প্রাইভেট কারসহ (চট্টমেট্রো গ– ০২– ১১৮০) ধরা পড়ে যান আরিফ। উপস্থিত জনতা তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে তুলে দেয়।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউল ইসলাম আজাদীকে বলেন, সাবেক সেনা বাহিনীর কর্মকর্তা আরিফ আহমদ রাতে ডবলমুরিং থানার চৌমুহনী এলাকায় গোলাম রাব্বানী মুন নামের এক ব্যবসায়ীকে একটা সাদা প্রাইভেটকারে করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ওই ব্যবসায়ীর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আরিফ আহমদকে আটক করে। তবে জনতার আগমন দেখে অন্যরা পালিয়ে যায়। এ সময় উত্তেজিত জনতা আরিফকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডবলমুরিং) হাসান মোল্যা বলেন, আরিফের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন তিনি একজন মাদকসেবী এবং মানসিক রোগী। এ কারণে সেনা বাহিনী থেকে ২০০৯ সালে তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। সে অসুস্থ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রামে এদিকে মামলার বাদী মুন অভিযোগ করে বলেন,পাবলিক তাকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছে। কিন্তু পুলিশ তাকে সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডবলমুরিং জোন) মোল্লা সাহেবের রুমে নিয়ে বসিয়ে রাখে। কারো সাথে কথা বলতে দেয়নি। মামলাও নেয়নি। আজ (সোমবার) সকাল থেকে বিভিন্ন দিক থেকে সমঝোতার চাপ আসছিল আমাদের উপর। কিন্তু আমরা মামলা করার বিষয়ে স্থির ছিলাম। শেষপর্যন্ত বিকেল সাড়ে তিনটায় মামলা নিলেও কাগজে কলমে দেখানো হয় যে মামলা হয়েছে সকাল নয়টা বিশে। এখন সত্যিকার বিচার পাবো কিনা বুঝতে পারছি না