ফুটবল বিশ্বকাপের মূল্য কত? অনেকের কাছে এমন প্রশ্নটা অবান্তর মনে হতে পারে। কিন্তু ফিফার কাছে প্রতিটি ফুটবল বিশ্বকাপের একটা নিদিষ্ট মূল্য আছে। আর ফিফার কাছে ব্রাজিল বিশ্বকাপের মূল্য ২.৫ বিলিয়ন ইউরো। অর্থাৎ ব্রাজিল বিশ্বকাপ থেকে ফিফার আয় হবে এই পরিমাণ অর্থ। একইভাবে ফিফা ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের মূল্য ধরেছে ৩ বিলিয়ন ইউরো। যা ২০০৬ বিশ্বকাপের দ্বিগুণ। আর এই আয়ের অর্ধেকই আসবে টেলিভিশন স্বত্ত্ব বিক্রি থেকে।
বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে জার্মান ও ইতালীর টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে পরিশোধ করতে হচ্ছে ১২৩ মিলিয়ন ইউরো, ফ্রান্সের টেলিভিশন চ্যানেল ১২২ মিলিয়ন ইউরো, বিবিসি ১২০ মিলিয়ন ইউরো ও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাষ্ট্রের চ্যানেলগুলোকে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো করে। টেলিভিশন স্বত্ত্ব বিক্রির সময় ধারণা করা হয়েছে, ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ অতীতের বিশ্বকাপের জনপ্রিয়তাকে হার মানাবে। আর টেলিভিশনে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ দেখবে সারা বিশ্বের ৭ বিলিয়ন মানুষ। প্রতিটি মানুষই ৬৪টি ম্যাচের কোন একটি অবশ্যই দেখবে।
ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনাল ২০১৪ সালের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচ হতে যাচ্ছে। এই বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচ থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো। আর বিশ্বকাপের এমন দর্শক প্রিয়তার কারণে ফিফার সাথে বৃহৎ কোম্পানিগুলো কাজ করতে উৎসাহী হয়ে উঠেছে। ব্রাজিল বিশ্বকাপে ফিফার অফিসিয়াল পার্টনার অ্যাডিডাস। অ্যাডিডাস ব্রাজিল বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে ফিফাকে চার বছরে ৪৮০ মিলিয়ন ইউরো প্রদান করেছে। আর ব্রাজিল বিশ্বকাপে ম্যাকডোনাল্ডসহ খাদ্য প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ফিফার আয় হবে ৭৭৩ মিলিয়ন ইউরো। এছাড়া টিকিট ও সেবাখাত থেকে ফিফার আরো আয় হবে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো।
ফিফার এত মুনাফার অর্থ কিভাবে ব্যয় হয়, এই প্রশ্নও আছে। বিশ্বকাপ থেকে আয় হওয়া অর্থ ফিফা ফুটবলের উন্নয়নে ব্যয় করে। মূলত ফুটবলের দূর্বল শক্তির দেশগুলোকে কোচ রাখা, ট্রেনিং ক্যাম্পের ব্যয় ও অবকাঠামো নির্মাণে ফিফা সরাসরি সহযোগিতা করে থাকে। ফিফার কর্মকর্তাদের রাজকীয় জীবন যাপনের জন্য বেতন ও ভাতার পিছনে ব্যয় হয় ফিফার লাভের সিংহভাগ। এছাড়া প্রতিটি বিশ্বকাপই ফিফার একাউন্টে বিলিয়ন ডলার অলস অর্থের জোগান দেয়।