দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ সরকারকে সংলাপে বসার জন্য বিএনপির নেতৃবৃন্দের আহ্বানে কর্ণপাত করছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা মেয়াদ শেষের আগে সংলাপের কোন সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়ে নানান সময়ে বক্তব্য দিয়েছেন।
সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের মতের সাথে মিল রেখে সংলাপ নিয়ে কথা বলেছেন রাষ্ট্রপতি। বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষের (২০১৯)আগে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, সংলাপের ব্যাপারে সরকারের কোন কার্পণ্য নেই; তবে তা হবে বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষে অর্থাৎ ২০১৯ এ।
১৯জুন বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আলোচনায় রাষ্ট্রপতি সংলাপের বিষয়ে বর্তমান সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা জোরদার করতে যে কোন বিষয়ের নিষ্পত্তির প্রধান অবলম্বন হচ্ছে সংলাপ। সংলাপের ব্যাপারে সরকারের কোন কার্পণ্য নেই। তবে কেউ যদি নির্বাচন বর্জন করে তাহলে সংলাপ হবে কীভাবে?’
জাতিসংঘ মহাসচিবও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এ বিষয়ে সহমত প্রকাশ করেছেন বলে জানান আব্দুল মোমেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বর্জনটা কোনমতেই গ্রণযোগ্য নয়। কারণ নির্বাচনই হচ্ছে সরকার পরিবর্তনের একমাত্র উপায়।”
এ সময় রাষ্ট্রপতি মহাসচিবকে বলেন, “মেয়াদ শেষ হলেই বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের বিস্তারিত প্রক্রিয়া নিয়ে সরকার যে কোন ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে সংলাপে রাজি আছে।”
দশম সংসদ নির্বাচনের আগে দুই নেত্রীকে সংলাপে বসাতে জাতিসংঘ থেকে বিভিন্ন মহলের তৎপরতা থাকলেও তা সফল হয়নি।
মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকের আগে জাতিসংঘ সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এরপর বিএনপির বর্জনের মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে সংলাপ চেয়ে আসছে বিএনপি।
স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা থেকে ৫০ মিনিটের ওই বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সেনা সদস্যদের অবদানের প্রশংসা করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
বান কি-মুন বলেন, “গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ যে অবদান রেখে চলেছে, সেজন্য আমরা বাংলাদেশের কাছে গভীরভাবে ঋণী।” রাষ্ট্রপতি শান্তিরক্ষা মিশনে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বাড়ানোর অনুরোধ জানান।
আবদুল হামিদ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা তুলে ধরে বলেন, “বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অপরাধীদের ছাড় দেয়া হচ্ছে না। মানবতাবিরোধী অপরাধী, সন্ত্রাস, অপহরণ, গুম ইত্যাদি অপরাধে জড়িতদের শাস্তি পেতেই হচ্ছে। হরতাল-অবরোধের নামে যারাই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল তারাও রেহাই পাচ্ছে না।”