গত বছরের ১লা ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশে পোশাক কারখানায় নতুন মজুরি কার্যকর হয়।
৭৭ ভাগ মজুরি বৃদ্ধি পেয়ে শ্রমিকদের এখন সর্বনিম্ন মজুরি দাড়িয়েছে ৫,৩০০ টাকা। কিন্তু মজুরি বৃদ্ধির এই চাপ সহ্য করতে পারছে না অনেক পোশাক কারখানাই। এর মূল কারণ, আন্তর্জাতিক ক্রেতারা পোশাকের দাম বাড়াচ্ছে না।
ফলে ছোট ছোট অনেক পোশাক কারাখানা এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র সহ সভাপতি শহীদুল আযিম। ৯৪৬টি পোশাক কারখানার ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে যে, তাদের মাত্র ৪০ ভাগ নতুন মজুরি বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। শহীদুল আযিম জানান, ‘‘অনেক পোশাক কারখানারই নতুন মজুরি বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই।''
কাজের পরিবশে এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলি গত ছয় মাসে ১১ কোটি ডলারের কার্যাদেশ হারিয়েছে। এরপরেও আরো কার্যাদেশ বাতিলের আশঙ্কা করছে বিজিএমইএ।
বিজিএমইএ-র সভাপতি আতিকুল ইসলাম জানান, ‘‘৫৭টি পোশাক কারখানা থেকে গত ছয় মাসে ১১ কোটি ডলারের কার্যাদেশ বাতিল হয়েছে। সংখ্যার হিসাবে যা প্রায় ২০ কোটি পিস পোশাক।'' তিনি জানান, ‘‘পোশাক শিল্পের ৪০ শতাংশ কারখানাই শেয়ার্ড বিল্ডিংয়ে। সেখানে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ইস্যুই এখন প্রধান। এ সব কারখানায় শতকরা ১৫ ভাগ শ্রমিক কাজ করেন। এভাবে কার্যাদেশ বাতিল হলে লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হবেন।''
নিরাপত্তা, কম মজুরি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা প্রশ্নে পশ্চিমা ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে তারা ভারত, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও কম্বোডিয়ায় চলে যাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ ভাগ আসে এই খাত থেকে। পোশাক কারখানায় নিয়োজিত আছে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক, যাঁদের ৮০ ভাগই নারী৷ তাই পোশাক কারখানার এ ধরণের বিপর্যয় পুরো অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ফেলবে। ব্যবসা হারাবেন বাংলাদেশের অনেক পোশাক কারখানার মালিক।