দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ আওয়ামী লীগের ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত আলোচনা সভার অনুষ্ঠান নিয়ে দলটির প্রকট সাংগঠনিক দেউলিয়াত্ব ফুটে উঠেছে।
ঘোষিত তিন দিনের কর্মসূচির মধ্যে প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে প্বৃরধন অতিথি ছিলেন সজীব ওয়াজেদ জয়,কিন্তু অসুস্থতার করনে তিনি অনষ্ঠানে আসেননি।দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান বৃহস্পতিবার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর। তবে নির্ধারিত দিনে তিনি আলোচনা অনুষ্ঠানে আসলেন না।
এমনকি আলোচনার অনুষ্ঠানও করলো না আওয়ামী লীগ। কেবল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ এবং দেশাত্মবোধক গান মাইকে বাজানো হলো। অনুষ্ঠানস্থলে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। এক কথায়, ক্ষমতাসীন সংগঠনের অনুষ্ঠানস্থল ছিলো নেতাকর্মী শূন্য। শুধু ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুল হক সবুজ এবং আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওছারকে অনুষ্ঠানস্থলে দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা সভা উপলক্ষে প্যান্ডেল তৈরির কারিগরসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিই ছিল বেশি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানস্থলে হাতে গোনা এক থেকে দেড়শো লোকের সরব উপস্থিতি ছিল। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা গণমাধ্যম কর্মীদেরও দেখা যায় অলস সময় কাটাতে। কেউ বাদাম খেয়ে, কেউ আবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লেকের পাড়ে ফটোসেশন করে সময় পার করেন।
অনুষ্ঠানের প্রথম দিন বুধবার আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা এবং পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের। কিন্তু তিনি অসুস্থার কারণে অনুষ্ঠানে আসতে পারবেন না বলে মঞ্চে ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
এরপর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীও জয়ের অনুষ্ঠানে না আসার বিষয়টি ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্ধারিত অনুষ্ঠান হবে কি হবে না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের দুই নেতা কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আবদুল মান্নান এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আমিন একে অপরের দিকে তাকিয়ে মঞ্চের সামনে বসে থাকা অন্যান্য নেতাদের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘ওখানে নেতারা আছেন, ওনাদের কাছে জানতে পারবেন।’
এই বলে এই দুই নেতা সাংবাদিকদের সামনে থেকে মঞ্চের দিকে হাঁটতে শুরু করেন। ওই সময় মঞ্চের সামনে বসে ছিলেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সুজিত রায় নন্দী।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার পরে অনুষ্ঠানস্থলে এসে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। তিনি কিছুক্ষণ মঞ্চে বসে থাকেন। এরপর মঞ্চে উপস্থিত নেতাদের নিয়ে সভাস্থল পরিদর্শনে বের হন।
এ সময় আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে অনুষ্ঠানস্থলে প্যান্ডেল তৈরির কাজসহ বিভিন্ন বিষয়ে নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করতে দেখা যায়।
সভাস্থল পরিদর্শন শেষে নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তিনি গাড়িতে উঠে চলে যান। শুক্রবার বিকেলে ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলীয় আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন বলে দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ নিশ্চিত করেছেন।