দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক সোলায়মান খানকে ১৪০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম মশিউর রহমান চৌধুরীর আদালত ।
বৃহস্পতিবার দুদকের পক্ষ থেকে আসামি সোলায়মান খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে সোলায়মান খানের ছবি তুলতে গেলে তার পক্ষে রাউজানের আওয়ামী লীগদলীয় এক নেতার সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে চার সাংবাদিককে আহত করেছে। এই হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন।
বৃহস্পতিবার আদালত চত্বরে প্রিজন ভ্যান থেকে সোলায়মান খানকে নামানোর সঙ্গে সঙ্গে সাত-আটজনের একটি দল তাকে ঘিরে বেষ্টনী তৈরি করে, যাতে কেউ তার ছবি তুলতে না পারে। এ সময় ক্যামেরা নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা এগিয়ে গেলে তাদের ধাক্কা ও কিলঘুষি মারতে থাকে সন্ত্রাসীরা। এতে আহত হন সমকালের ফটোসাংবাদিক মো. রাশেদ, রিপোর্টার আহমেদ কুতুব, চ্যানেল-২৪-এর স্টাফ রিপোর্টার জামশেদুল করিম ও ক্যামেরাপারসন শফিক আহমেদ সজিব। এ সময় আদালতে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা ছিল নীরব। অবশ্য ঘটনার পর আদালত এলাকায় পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
আদালতের হাজতখানা থেকে বেলা দুইটা ৫ মিনিটে শাহজালাল ব্যাংকের পরিচালক সোলায়মান খানকে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তোলা হয়। শুনানিতে অংশ নেন রাষ্ট্রপক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী ও দুদকের পক্ষে পিপি মাহমুদুল হক মাহমুদ। শাহজালাল ব্যাংকের পক্ষে অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আসামিপক্ষে সাবেক মহানগর পিপি কামাল উদ্দিন আহম্মদ, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, ইলিয়াস খান, ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী ও সানোয়ার হোসেন লাভলু শুনানিতে অংশ নেন।
এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাঁকে নির্দোষ দাবি করে রিমান্ড বাতিল এবং জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।
পরস্পর যোগসাজশ করে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের জুবিলি রোড শাখার ১৪০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নগরীর কোতোয়ালি থানায় ব্যাংকের পরিচালক সোলায়মান খান গংয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ মামলায় গত ২৬ জুন সোলায়মানকে ঢাকার বিজয়নগরের আকরাম টাওয়ার থেকে গ্রেফতার করে দুদক। তবে এখনো পলাতক এসকে স্টিলের কর্ণধাররা। একই ঘটনায় এর আগেও আরো দুটি মামলা করে শাহজালাল ব্যাংক।
আদালতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ বলেন, “ছবি তুলতে যাওয়ার সময় আসামির সমর্থকরা হামলা করতে পারে্- এমন পরিস্থিতি সচরাচর হয় না। এ জন্য আগে থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি। হঠাৎ করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে।” আহত চার সাংবাদিক লিখিত অভিযোগ দিলে ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে