বিশ্বকাপের উত্তেজনাকে আরও আনন্দঘন করে তুলতে বরাবরই বাংলাদেশ টেলিভিশন ভূমিকা রেখে আসছে। কিন্তু এবার তাদের সময়োপযোগী পদক্ষেপ না নেয়ায় বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক ফুটবলপ্রেমী দর্শক বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসরের অনেক খেলা দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ নিয়ে সরকারি টেলিভিশনটির ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল বলে মনে করেন সাধারণ দর্শকরা।
জানা গেছে, বিশ্বকাপের মাত্র একদিন আগে বিটিভি সরাসরি খেলা দেখানোর সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও বিশ্বকাপ ফুটবলের সবগুলো খেলা সম্প্রচারের জন্য ফিফার কাছ থেকে আগেই সবুজ সংকেত পেয়েছিল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), গাজী টেলিভিশন (জিটিভি) এবং মাছরাঙা টেলিভিশন।
জিটিভি ও মাছরাঙা খেলা সম্প্রচারের ব্যাপারে যোগাযোগ অব্যাহত রাখায় তারা বিশ্বকাপের সবগুলো খেলাই (৬৪টি) সরাসরি সম্প্রচারের সুযোগ লাভ করে। অন্যদিকে, বিটিভির খামখেয়ালিপনার জন্য তিন চ্যানেলের মধ্যে তারাই সর্বশেষ টোটাল স্পোর্টস মার্কেটিংয়ের (টিএসএম) সঙ্গে চুক্তি করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী বিটিভি প্রথম রাউন্ডের ১৭টি এবং নক আউট পর্বের ১৫টিসহ মোট ৩২টি খেলা দেখানোর সুযোগ পায়।
ক্যাবল নেটওয়ার্ক না থাকায় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের টিভি দর্শকরা বেসরকারি টিভি চ্যানেল দেখতে পান না। অন্যদিকে টেলিস্টেরিয়ালের সুবিধা থাকায় গ্রামাঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠী বিটিভির দিকেই মুখিয়ে থাকে। চার বছর অপেক্ষার পর বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে সবাই যখন উন্মুখ তখন বিটিভি কর্তৃপক্ষের গাফেলতির কারণে প্রথম পর্বের অনেক খেলা দেখা থেকে টিভি দর্শকরা বঞ্চিত হয়।
খেলা সম্প্রচার বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রেজেন্টশন অ্যান্ড মনিটরিং বিভাগের চিফ এডিটর শাহরিয়ার মোহাম্মদ হাসানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বাংলামেইলকে বলেন, ‘কতগুলো খেলা দেখানো হবে আমার এটা মুখস্থ নেই। এটি পকেটে নিয়ে আমি হাঁটি না।’ খেলার শিডিউল জানতে হলে তিনি ওয়বেসাইট দেখতে বলেন। কন্ট্রোলার/সেলস ম্যানেজার মো. আবু তাহের বলেন, কতগুলো খেলা দেখানো হবে এটা যারা প্যাকেজটি নিয়ে এসেছেন তাদের ব্যাপার। আমরা ৬৪টি খেলা দেখাতে চেয়েছিলাম তারা আমাদের ৩২টি দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বিটিভির মহাপরিচালক আব্দুল মান্নানকে ফোনে ও মোবাইলে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, এর আগে টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটসহ বাংলাদেশের যে কোনো টেস্ট খেলা স্বত্ব নিয়ে বিটিভি সম্প্রচার করেছে। বিটিভির আগ্রহের কারণে ওই সময় খেলার স্বত্ব আগে বিটিভিকে দিয়ে পরে অন্যদের দেয়া হতো। এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে বিটিভি সিদ্ধান্ত নিতে গড়িমসি করায় দর্শকরা বিশ্বকাপের সবগুলো খেলা দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।