মাত্র কয়েক মাস আগে দক্ষিন কোরিয়ায় একটি ফেরি ডুবেছিলো। ওই ঘটনার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রীসহ অনেকেই বোকার মতো পদত্যাগ করেছিলো। দেশটির কোষ্টগার্ড ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে সব সাজানোর ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। একইসঙ্গে তিনি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান। জানি বাংলাদেশের নেতারা এতো বোকা নন, কাজেই পদত্যাগ করবেন না। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ-প্লিজ দায়িত্বে ক্রমাগত অবহেলার দায়ে এবার অন্তত নৌমন্ত্রী শাজাহান খানকে সরিয়ে দিন। আমাদের রেহাই দিন।
শাজাহান খান সেই নৌমন্ত্রী যিনি গরু-ছাগল চিনলেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া যায় এই উক্তির জনক। বছর তিনেক আগে খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীরের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর সারাদেশে যখন নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন চলছিলো তখন এই উক্তি করেছিলেন নৌমন্ত্রী। আমার তো মনে হয় না,এই লোকটা মানুষকে মানুষ মনে করেন। তাকে মন্ত্রী করা হয়েছে, সাধারণ মানুষের স্বার্থ দেখার জন্য। কিন্তু তিনি শ্রমিক নেতা হিসেবে দেখেন তার স্বার্থ। আসুন দেখে নেই এই শাজাহান খানের জীবন বৃত্তান্ত।
শাজাহান খানের বাবা ছিলেন বঙ্গবন্ধু অন্তপ্রাণ-১৯৭০সালেরএমসিএ আসমত আলী খান। কিন্তু তারই ছেলে শাজাহান খান ১৯৭২সালে জাসদ গণবাহিনীতে যোগ দেন, অথচ তার বাবা তখন গণপরিষদ সদস্য। ১৯৮৬সালে শাজাহান খান আওয়ামী লীগে যোগ দেন -এমপি হন; তখন তিনি শ্রমিক নেতা। ১৯৯৬ সালে তাকে মন্ত্রী না করায় শাজাহান খান ক্ষুব্ধ হন। পরে তাকে সংসদীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে শাজাহান খানের আসনে লীগ মনোনয়ন দেয় বাহাউদ্দিন নাসিমকে। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাজাহান খান চলে যান হাওয়াভবন। শুরু হয় দেন দরবার। তিনি তারেক রহমানের কাছে মন্ত্রীত্ব দাবী করেন।বিএনপি অবশ্য শেষ পর্যন্ত তাকে দলে নেয়নি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী-যেই লোকের আদর্শ বলতে কিছু নেই, যিনি আওয়ামী লীগে মনোনয়ন না পেয়ে হাওয়া ভবনে দৌড়ান তার জন্য আপনি আর কতো দরদ দেখাবেন। আর আপনার যদি খুব দরদ থাকে তাকে মন্ত্রী রাখুন, কিন্তু যোগাযোগ ও পরিববহনসংশ্লিষ্ট বাদে অন্য যে কোন মন্ত্রণালয় দিন। আর শুধু শাজাহান খান নন, বিআইডব্লিউটিএর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদেরও এবার একটু সরিয়ে দেন। নৌপথে কাজ করতে পারবেন এমন যোগ্য মানুষদের সেখানে বসিয়ে জাতিকে আরো লাশ দেখা থেকে মুক্তি দিন।আমাদের ক্ষমা করুন।