DMCA.com Protection Status
title="৭

পরামর্শের নামে আভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ: ৫ দূতাবাসকে সতর্ক করবে সরকার

Bangladesh-Govtবাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘নাক গলানোর’ বিষয়ে পাঁচটি দূতাবাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সভাপতিত্বে দুপুরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক (বাই ল্যাটেরাল) সচিব মোস্তফা কামাল ও মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি বিভাগের মহাপরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকটি প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে।

সিদ্ধান্তের বিষয়টি পররাষ্ট্র সচিব দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে  নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো, নজরদারি এবং পরামর্শের নামে হস্তক্ষেপের বিষয়ে ঢাকাস্থ পাঁচ দূতাবাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), নেদারল্যান্ডস ও ভারত।

এর আগে গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা আমাদের বলেছিলেন, ‘দূতাবাসগুলোর ওপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরদারি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কয়েকটি দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাদের মন্তব্যকে অনধিকার চর্চা হিসেবেই দেখছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ধরনের নজরদারি অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে বলেও মনে করে মন্ত্রণালয়। পৃথিবীর যেসব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশন রয়েছে সেগুলো কখনোই ওই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায়নি। তবে কেন তারা এ ধরনের কাজ করছে, সেটি নিয়ে ভাববার সময় এসেছে।’

এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃঅনুবিভাগের একজন পরিচালক দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকে উল্লেখিত দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নির্বাচনের আগে ও পররবর্তীতে দূতাবাসগুলোর এ বিষয়ে বিভিন্ন বিবৃতি ও মন্তব্য বর্তমান সরকারকে বহির্বিশ্বের কাছে নানাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এরপর বিভিন্ন সময়ে দূতাবাসগুলো থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পরামর্শের নামে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার ঘটনাও ঘটেছে। সর্বশেষ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী (বিচারপতিদের অভিসংশন) বিষয়েও তাদের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। একই সঙ্গে সম্প্রচার নীতিমালা নিয়েও একটি বিশেষ দূতাবাস সরকারের সমালোচনা করেছে। যা দূতাবাসের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে দূতাবাসগুলোকে মৌখিকভাবে অথবা লিখিতভাবে সতর্ক করার বিষয়ে ভাবছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।’

এদিকে, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে না দূতাবাস। তবে সরকারের বিভিন্ন কাজের প্রতি নজর রেখে নিয়মিত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রতিবেদন তৈরি করা দূতাবাসের কাজটিই করে যাচ্ছে। এর বেশি কিছু নয়।’ সরকারের সমালোচনা করাও হচ্ছে না বলে তার দাবি।

কানাডা হাইকমিশনের এক মূখপাত্র বলেন, সম্প্রচার নীতি নিয়ে দূতাবাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারকে জানানো হয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, কানাডা চায় বাংলাদেশে গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা। গণতন্ত্রাণিক পন্থাকে সুসংহত করতেই এ চেষ্টা বলেও জানা গেছে। তবে সতর্ক করার বিষয়টি এখনো তাদের জানা নেই বলে জানিয়েছে হাইকমিশন সূত্র।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!