দীর্ঘ ৬ বছর পর আবারও নিবন্ধনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল)। ২০০৮ সালে নিবন্ধনের জন্য দলটি আবেদন করলেও শর্ত পূরণ না করতে পারায় সে বছর দলটির কপালে নিবন্ধন জোটেনি।
গতকাল বোরবার আবেদনটি যাচাই-বাছাই করার জন্য নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তা দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ কে বলেন, ‘কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের (বাকশাল) মহাসচিব নিবন্ধনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিনের কাছে একটি আবেদন করেন। পরে তিনি আবেদন পত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট শাখাতে পাঠান। তারা যাচাই-বাছাই করে রিপোর্ট দিলে কমিশন পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবে।’
ইসির নিবন্ধন বাছাই কমিটির উপসচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ২০০৮ সালেও বাকশাল নিবন্ধনের আবেদন করেছিল। কিন্তু তারা শর্ত পূরণ করতে না পারায় নিবন্ধন দেয়া হয়নি।
এ নিবন্ধনের বিষয়ে দলটির মহাসচিব কাজী জহিরুল কাইয়ুম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবকে পুনর্জাগরণ করতেই আবারও বাকশালের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলাম। আশা করি যাচাই-বাছাই শেষে আমরা নিবন্ধন পাবো।’
বর্তমানে ফরিদপুর থেকে বাকশালের কার্যক্রম চলছে বলেও জানান তিনি। ১৫ সদস্যের কমিটিতে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শরীফ মো. মনীরুজ্জামানে এবং তিনি মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালে সব রাজনৈতিক দল ও চারটি পত্রিকা ছাড়া বাকি সব নিষিদ্ধ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাকশাল গঠন করা হয়। ১৫ আগস্ট তিনি নিহত হওয়ার পর দলটির বিলোপ ঘটে।
সিইসির কাছে করা আবেদনে কাজী জহিরুল উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের প্রথম শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাকশালের পক্ষ থেকে ৩ জন এবং ১৯৯১ সালে ৫ জন সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
ইতোপূর্বে দেশে যখন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয় প্রথমভাগে তখনই বাকশাল নিবন্ধিত হয়। কিন্তু পরে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন তার ব্যক্তিগত আক্রোশ ও খামখেয়ালীপনায় তাদের নিবন্ধন বাতিল করেন, যা সম্পূর্ণরুপে নির্বাচন কমিশনের আইনের পরিপন্থি।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, অত্যন্ত লজ্জার বিষয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতিষ্ঠিত ও তার রক্তস্নাত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ-বাকশালের নিবন্ধনের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সে বহুল আলোচিত দলটিকে নিবন্ধন দেয়া হয়নি। এবার বাকশালের নিবন্ধন দেয়ার জন্য আবেদন করছি।
অথচ জাতির জনকের খুনি রশিদ, ফারুকের রাজনৈতিক দল ফ্রিডম পার্টিকে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।