DMCA.com Protection Status
title="৭

কেরানীগঞ্জে চান্চল্যকর ৪ খুনের নেপথ্যে পরকিয়া !

r220চুরির মালামাল ভাগাভাগি এবং ডাকাত সুমন ও জনির স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক থাকার কারণেই নির্মমভাবে খুন হন সাজু। আর এ হত্যাকাণ্ড দেখে ফেলায় সাজুর স্ত্রী রঞ্জি এবং দুই সন্তান ইমরান ও সানজিদাকে মেরে ফেলে খুনিরা। এই চারজনকে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

আর এই হত্যামিশনে অংশ নিয়েছিল একজন নারীসহ পাঁচ জন। হত্যাকাণ্ডের শিকার সাজুসহ খুনিরা সবাই অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িত।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টোরোডে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের সামনে গ্রেপ্তার খুনিরা এ কথা বলেন।

জনি জানান, ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে সাজুর বাসায় তাকে ডেকে নিয়ে যায় ডাকাত সুমন। সেখানে পৌঁছলে জনি ‘খাওন’ (ইয়াবা) এনেছে কি না জানতে চান সুমন। জনি জানান, টাকা না থাকায় তিনি আনেননি। এ কথা শুনে সুমন তাকে পাঁচশ টাকা দিয়ে ইয়াবা আনতে বলেন। অবশ্য এর আগে সাজুকে হত্যার মূল পরিকল্পনা করেছিলেন সুমন। তাই প্রথমে অবস্থান জানার জন্য সাজুর স্ত্রীকে ফোন করে নিশ্চিত হন। এরপর সুমন, আফসানা, সিএনজি সুমন এবং নাসির সাজুর বাসায় যায়। এরপরই ডাকা হয় জনিকে।

জনি আরও জানায়, তিনি ইয়াবা আনার জন্য বেরিয়ে যান। এরই মধ্যে নবাবগঞ্জের চুরাইন বাজার স্বর্ণের দোকান থেকে লুণ্ঠিত মালামালের ভাগবাটোয়া এবং সুমন ও জনির স্ত্রীর সঙ্গে সাজুর অবৈধ সম্পর্কের বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে ডাকাত সুমন ও সিএনজি সুমন সাজুর গোপনাঙ্গে দড়ি বেঁধে লটকিয়ে ব্যাপক মারধর করে। পরে জনি এসে সাজুর নাক চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

সুমন জানান, সাজুকে হত্যার পরই তারা জনির আনা ইয়াবা খেয়ে ‘মাথা ঠাণ্ডা’ করে।

এ হত্যাকাণ্ডের সময় সাজুর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে অন্য ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে তার স্ত্রী এ দৃশ্য দেখে ভয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। বাচ্চা দুটো কান্নাকাটি শুরু করে।

unnamed-14-e1411562741924সুমন আরও জানান, তাদের সহযোগী আফসানা সাজুর স্ত্রী ও বাচ্চা দুটিকে না মারার জন্য অনুরোধ করে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে স্ত্রী রঞ্জিকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। আর ছোট বাচ্চা দুটিকে কীভাবে হত্যার করবে তা নিয়ে প্রথমে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলেও তারা ঘুমিয়ে পড়ার উপক্রম হলে জনি তাদের ঘাড় মটকে দেন।

এসব ঘটনা ঘটাতেই খুনিদের রাত সাড়ে ১২টা বেজে যায়। এরপর তারা যে যার মতো বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা জেলা পুলিশ। এদের মধ্যে সিএনজি সুমন ও জনি খুনের মিশনে অংশ নিয়েছিলেন। ডাকাত সুমন এখনও পলাতক।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জাকারিয়া ওরফে জনি (২৬), সুমন ওরফে সিএনজি সুমন (৩০), আব্দুল মজিদ (২৪), রফিক (৩৮), সাহিদা বেগম (৩৬), মুক্তা বেগম (৩০) ও রানী বেগম।

জনি ও সাহিদাকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থেকে, মজিদকে দক্ষিণ কেরারীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর এবং রফিককে হাসনাবাদ এলাকায় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বাকিদের মধ্য সিএনজি সুমন ও রাণী বেগমকে গাজীপুরের ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকায় থেকে গ্রেপ্তার করা হয।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, সিএনজি সুমন ও জনিকে ছাড়া বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে খুনিদের আশ্রয় ও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করার কারণে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী জেলা পুলিশ সুপার মোনালিসা।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন কলাকান্দি এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রী এবং দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!