মহানবী (সঃ)এবং পবিত্র হজ্জ নিয়ে চরম অবমাননাকর বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়া ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এখনও দেশে ফেরেন নি। তিনি নিউইয়র্ক সফর শেষ করে মেক্সিকোতে গেছেন।
সেখানে তাঁর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক একটি পুরস্কার গ্রহণ করার কথা। জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধির কার্যালয়ের বরাত দিয়ে আজ মঙ্গলবার বিবিসি বাংলা এ তথ্য জানায়।
হজ নিয়ে মন্তব্য করে তোপের মুখে থাকা বাংলাদেশের মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেছেন, তিনি তার মন্তব্যে অনড়।
তবে শুধুমাত্র তার দলের নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেই তিনি তার সম্মানে মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে পারেন।
মেক্সিকো থেকে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, একজন স্বাধীন ও আধুনিক মানুষ হিসেবেই তিনি হজ সম্পর্কে এই মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, চাপের মুখে তার পদত্যাগ করার কোনো প্রশ্নই আসে না।
“আমি কিছুই করবো না। প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশ দেবেন আমি সেটা প্রতিপালন করবো।” বলেন তিনি।
তিনি বলেন, তার এই মন্তব্যকে ঘিরে বিভিন্ন দলের নেতারা যেসব কথাবার্তা বলছেন, তার অপসারণের যে দাবি উঠেছে, সেসব বিষয়ে তিনি জানেন।
আমি শুধু আমার বিশ্বাসের কথা বলেছি। এতে কারো কারো আঘাত লাগতে পারে। এবং তারাও আমাকে আঘাত করে মতামত প্রকাশ করছে
আবদুল লতিফ সিদ্দিকী
এবিষয়ে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা বা প্রধানমন্ত্রীর সাথেও তার কথা হয়নি।
মি. সিদ্দিকী বলেন, “আমি শুধু আমার বিশ্বাসের কথা বলেছি। এতে কারো কারো আঘাত লাগতে পারে। এবং তারাও আমাকে আঘাত করে মতামত প্রকাশ করছে।”
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশীদের একটি অনুষ্ঠানে তিনি কি বলেছেন, তার একটি অডিও বাজিয়ে শোনাতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তাকে শোনানোর প্রয়োজন নেই। কারণ তিনি কি বলেছেন সেটা তিনি জানেন। এবং তার দায়িত্ব তিনি নিচ্ছেন।
তিনি বলেণ, “যা রেকর্ড করা আছে। সেটা ঠিকই আছে। আমি ওই কথার ১০০ ভাগ দায়িত্ব নিচ্ছি।”
তিনি বলেন, “এখন তার অনুতাপ করার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্র পরিচালনায় তাকে কিছু দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি যেটা ভালো মনে করবেন সেটা তিনি করবেন। আমি যদি তার বোঝা হয়ে যাই তাহলে তার বোঝা রাখবেন কেনো?”
মি. সিদ্দিকী বলেন, তিনি বাংলাদেশে বসে এই মন্তব্য করেন নি।
“আমি ভাবছিলাম মুক্ত পৃথিবীতে আসছি, যেখানে সবাই মুক্ত বিহঙ্গ, কোনো কিছুতেই বাধা নাই। এখানে যে কালো বিড়াল এতো রয়ে গেছে তাতো আমি জানি না।”
এদিকে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর বিরূপ মন্তব্যের বিষয়ে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘একদিকে তিনি নিজে একজন মুসলমান হয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। হজ্জ ও তাবলীগ নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তাবলীগে আমাদের দেশেই টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় প্রায় ২০ থেকে ২২ লাখ মানুষ একত্রিত হয়। আবার আমাদের ফিউচার লিডার সজিব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এটা একেবারেই কাণ্ডজ্ঞানহীন মন্তব্য। এই ধরণের মন্তব্য এক ধরণের অপরাধ। এই অপরাধের শাস্তি তো তাঁকে পেতেই হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন বিদেশে আছেন। তিনি ফিরে এলে আমার বিশ্বাস এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করা হতে পারে কী?-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সে ধরনের আভাস আছে। কিছু রিলায়বল সোর্স থেকে খবর পাচ্ছি যে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হবে, এ রকম একটা ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আছে।’