ইথিকস না মেনে সাংবাদিকরা এখন তাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা লেখেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে খবর প্রকাশ করায় গণভবনে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়না। আমি তো তা করি নি। অথচ তোমরা সাংবাদিকতার ইথিকস না মেনে আমাকে নিয়ে লেখো।’
শনিবার রাতে রংপুরের দর্শনার পল্লীনিবাসে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বাংলামেইলকে এসব কথা বলেন।
বিএনপির আন্দোলনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘অনেক ইস্যু থাকার পরও বিএনপি কোনো ইস্যুতেই আন্দোলন করতে পারেনি। এখন তারা ব্যর্থ হয়ে মধ্যবর্তী নির্বাচন চাইছে। কিন্তু কেন নির্বাচন হবে? সেটাতো স্পষ্ট করতে হবে। তা না হলে কিসের জন্য মধ্যবর্তী নির্বাচন?
মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভবনা নাকচ করে দিয়ে এরশাদ বলেন, ‘ইস্যু ছাড়া যেমন আন্দোলন হয় না, তেমনি আন্দোলন ছাড়াও মধ্যবর্তী নির্বাচন হবে না।’
সম্প্রতি মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর কটূক্তির ব্যাপারে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপি এই ইস্যুতেও মাঠে নামেনি। আন্দোলন করেনি। অথচ আমি প্রথম দেশে লতিফ সিদ্দিকীর গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানিয়ে রাজপথে নেমেছি।’
সরকারের সিদ্ধান্ত দেখে বিএনপি রাজনীতি করতে চায় বলেও মন্তব্য করেন এরশাদ।
বিএনপিতে চরম নেতৃত্ব সঙ্কট চলছে দাবি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘লতিফ সিদ্দিকীর ইসলাম বিরোধী ধৃষ্টতার প্রতিবাদও করতে পারেনি বিএনপি। লতিফের ফাঁসির দাবিতে আমি সবার আগে প্রতিবাদ করেছি।’
রোববার দুপুরে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা পরিষদ হলরুমে স্থানীয় জাতীয় পার্টি আয়োজিত কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির শাসনামলে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে এরশাদ বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য জেলা, উপজেলা, সার্কিট হাউজ, যমুনা সেতু, তিস্তা ব্যারেজ আমি করেছি।’
জাতীয় পার্টির মন্ত্রীরা দুর্নীতি করেননি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদেরের বাজার খরচের টাকা এখনও আমাকেই দিতে হয়। অথচ ইচ্ছে করলে তিনি টাকার পাহাড় বানাতে পারতেন।’
এ সময় আগামী নির্বাচনে নীলফামারী-০৩ (জলঢাকা-কিশোরগঞ্জ) আসনে জিএম কাদেরকে সহযোগিতা করতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান এরশাদ।
একই অনুষ্ঠানে সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদের বলেন, ‘নানা সঙ্কটের মধ্যে ফেলে জাতীয় পার্টির অস্তিত্ব বিলীন করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কেউ তা করতে পারেনি।’
সব যড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দলকে সুসংগঠিত করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
দেশে অনিয়শ্চয়তার কথা উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, ‘নির্বাচন হয়েছে, জাতীয় পার্টি প্রধান বিরোধী দল হিসেবে রয়েছে। সে হিসেবে আমাদের গুরুত্ব রয়েছে। আমরা এখন দাঁড়াতে চাই, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
জলঢাকা পৌর মেয়র ও উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্মআহ্বায়ক ইলিয়াস হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে কর্মী সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিরোধীদলীয় হুইপ শওকত চৌধুরী, জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মাহবুব আলী বুলু, যুগ্ম-আহ্বায়ক সাজ্জাদ পারভেজ ও উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বুলু চৌধুরী।