অত্যন্ত দুঃখজনক ভাবে বিশিষ্ট শিক্ষক ড: পিয়াস করিমের মরদেহ ‘শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য’ শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়ার অনুমতি দেয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পিয়াস করিমের স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমেনা মহসীন স্বাক্ষরিত একটি আবেদন মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয় ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী বুধবার জানান, 'মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড' নামের একটি সংগঠন বৃহস্পতি ও শুক্রবার শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান করার জন্য আগেই অনুমতি চেয়েছিল। কর্তৃপক্ষ তাদেরই অনুমতি দিয়েছে।
এর আগে পরিবারের পক্ষ থেকে পিয়াস করিমের লাশ বুধবার শহীদ মিনারে রাখার কথা বলা হলে সরকার সমর্থক কয়েকটি ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তা প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়।
এদিকে পিয়াস করিমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার দিনব্যাপী শোক দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। কর্মসূচীতে সেদিন সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পিয়াস করিমের প্রতি ‘শেষ শ্রদ্ধা’ জানানোর বিষয়টিও রয়েছে।
তবে, পিয়াস করিমের লাশ শহীদ মিনারে নেয়া হলে সর্বাত্মক প্রতিরোধ করা হবে বলে জানিয়েছে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। আজ বুধবার বিকেলে মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়েছে, শুক্রবার সকাল নয়টা থেকে তাদের কর্মীরা শহীদ মিনারে অবস্থান করবে।
এর আগে গণজাগরণ মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠন পিয়াস করিমকে ‘যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষের’ ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে তার মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়।
তবে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, পিয়াস করীমের মরদেহ শহীদ মিনারে নেয়ার ক্ষেত্রে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ যে বাধা দিচ্ছে এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোন বক্তব্য নেই।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘প্রয়াত পিয়াস করিম গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলতেন। এজন্য এই অবৈধ সরকারের লালিত কিছু ছাত্র সংগঠন তার মরদেহ শহীদ মিনারে নিতে বাধা দিচ্ছে। এতে প্রমাণ হয়, সরকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকেও পৈত্রিক সম্পত্তি বানানোর চেষ্টা করছে’।যে কোন মূল্যে মরহুম পিয়াস করিমের মরদেহ জনগনের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনারে নেয়া হবেই।
এ প্রসঙ্গে সিপিবি নেতা রুহীন হোসেন প্রিন্স বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা যে রাজনীতি এতটাই নোংরা হয়ে গেছে যেখানে একজন সম্মানিত নাগরিককেও অসন্মান করা হচ্ছে ।
এ প্রেক্ষাপটে পিয়স করীমের ভাই লোটাস করিম আজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা যে কোন পরিস্থিতিতে শহীদ মিনারে কফিন নেয়ার পরিকল্পনা বাদ দেবেন না। শহীদ মিনার থেকে মরদেহ বাসায় নেওয়া হবে, শুভাকাঙ্ক্ষী ও আত্মীয়-স্বজনরা দেখবেন। এরপর বায়তুল মোকাররমে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।