নির্বাচন দিলে অস্থির হয়ে উঠতে পারে ক্যাম্পাস। তাই অচল ডাকসু সচলের ঝুঁকি নিতে আগ্রহী নয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকার। তবে উপাচার্য আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী বলছেন, শিক্ষার্থীদের এই ফোরামে নির্বাচনের ইচ্ছা তাদের আছে কিন্তু পরিবেশ নেই। অথচ প্রতিবার সিনেট সিন্ডিকেট নির্বাচনে শূন্য থাকছে ছাত্র প্রতিনিধি। আর নির্বাচনে উপেক্ষিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের অধিকার।
২০০৯ সালে জানুয়ারিতে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরদিনই অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকী কথা দিয়েছিলেন যত দ্রুত সম্ভব ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিবেন। ওই বছর ২৩ অক্টোবর ছাত্র সংগঠগুলোর সাথে বৈঠকে তিনি একই কথা বলেন। কিন্তু ছয় বছরেও হয়নি ডাকসু নির্বাচন। তাই প্রতিক্ষা বাড়লো ২৪ বছরের।
অথচ ৭৩’র অধ্যাদেশে স্পষ্ট করে বলা আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সিন্ডিকেটে শিক্ষকদের পাশাপাশি ছাত্র প্রতিনিধি থাকতে হবে। আর নিয়মিত হতে হবে ছাত্র পরিষদ নির্বাচন। সম্প্রতি সিন্ডিকেট হয়ে গেলেও ছাত্র প্রতিনিধি পদটি আগের মতোই শূন্য রয়ে গেল।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী এ সম্পর্কে বলেন, ডাকসুকে সচল করার পরিকল্পনা আমাদের আছে। তবে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে অনেক প্রতিষ্ঠান এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত হচ্ছে।
তবে ডাকসুর সাবেক নেতাদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাসীনতার খেসারত দিচ্ছে ছাত্র রাজনীতি। ডাকসুর সাবেক ভিপি রাশেদ খান মেনন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আধিপত্য খর্ব হতে পারে। আর ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল কেন এটি করতে চান না সেটি আমার ধারণায় আসে না।
আর ডাকসুর আরেক ভিপি মাহফুজা খানম বলেন, সাধারণ ছাত্র নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সংসদটি হতো তার ভেতর দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক্সট্রা কারিকুলাম লক্ষ্য করা যেতো।
এদিকে ডাকসুর নির্বাচন নিয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আর সতর্ক অবস্থানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ছাত্র সংগঠনগুলো ডাকসু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারলে তফসিল ঘোষণা করা যেতে পারে বলে মনে করছে সরকার। এসম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু তারা সার্বিক পরিস্থিতি নিশ্চিত হতে পারে না। তারা মনে করে এটি করতে গিয়ে সম্যসা সৃষ্টি হলে লেখাপড়ার ক্ষতি হতে পারে। তখন লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।
সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের মতো শিক্ষকদের অধিকার রক্ষায় যে নির্বাচন তা নিয়মিতই হয়ে আসছে। অথচ ছাত্রদের নিয়মিত অধিকার রক্ষায় যে ডাকসু রয়েছে তা দু’যুগের বেশি সময় ধরে অচল রয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রদের অধিকার সিনেট এবং সিন্ডিকেটে প্রতিনিধিত্ব করার দাবি ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।