গত ১ নভেম্বর সারা দেশে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ গ্রিড বিকল হওয়ার কারণেই এ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার রিপোর্ট প্রকাশ করেন বিদ্যুৎপ্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বীপু। তিনি বলেন, ‘জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ভারত অংশ থেকে আমদানি লাইনে লো-ভোল্টেজের কারণে এটি ঘটেনি।’
তবে সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে বিস্তারিত তদন্তের জন্য অপেক্ষা করার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব জানানো হয়। এছাড়া, পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে তদন্ত দলকে আরো ১০ দিন সময় দেয়া হয়েছে।
গত ১ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বহরমপুর সাবস্টেশন থেকে বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সাবস্টেশনে যুক্ত ৪৫০ মেগাওয়াটের আমদানি লাইনে সমস্যার পরে মূলত বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে। ভারত থেকে আসা দুই লাইনে একটি বিকল হয়ে যাওয়ার কথা স্বীকারও করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। তবে বিকল্প লাইনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয় এবং তাদের অংশে কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানায় তারা।
ওই সময় ভারতীয় লাইনে সমস্যার কারণে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়েছে- বেশক’টি গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ করা হয়। তবে পরের দিন কোনো ধরনের দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ভারত।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে মূলত সেই বিতর্কের অবসান ঘটানোরই চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া গেছে ভারত অংশে নয় বরং বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে সমস্যার কারণেই বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে।
উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর শনিবার বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টা ২৭ মিনিট থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা রাজধানীসহ সারা দেশ একযোগে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকে।
কী কারণে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়েছে তা অনুসন্ধানে দুটি কমিটি করা হয়। এর একটি বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) আহমেদ কায়কাউয়াসকে প্রধান করে আট সদস্যের কমিটি। অন্যটি পিজিসিবির পরিচালক (অপারেশন) তপন কুমার রায়কে প্রধান করে ৫ সদস্যের কমিটি।
তিন কার্যদিবসের মধ্যে গ্রিড বিপর্যয় কী কারণে হয়েছে তা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তিন কার্যদিবসের শেষ দিন ছিল গতকাল বুধবার।