বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতা ও সাবেক বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী সুব্রামনিয়ান স্বামী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ যদি অবৈধ অভিবাসী বন্ধ করতে ভারতকে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে তাদেরকে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
ভারতের ভেতরকার উত্তাপ বোঝা উচিত বাংলাদেশের। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেয়াই অবৈধ অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্যার একমাত্র সমাধান। গতকাল এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
এতে বলা হয়, গুয়াহাটি সার্কিট হাউজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বিষোদগার করেন। এ সময় তিনি বলেন, আসাম চুক্তি অনেক পুরনো হয়ে গেছে। এতে এমন কিছু যোগ করতে হবে যা হবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের নেয়া শাস্তিমূলক পদক্ষেপ। সুব্রামনিয়ান স্বামী বলেন, অবৈধ অভিবাসী বন্ধে আমি শক্তিশালী কিছু নীতি চাই। আমি চাই এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সহযোগিতা করুক। তাদেরকে পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, অবৈধ অভিবাসী ইস্যুতে তাদেরকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
যদি তারা পদক্ষেপ না নেয় তাহলে তাদের পরিণতি ভোগ করতে হবে। বাংলাদেশকে বুঝতে হবে যে, এখনই সময় অবৈধ অভিবাসী বন্ধের। সুব্রামনিয়ান স্বামী যখন এসব কথা বলেন, তখন সেখান থেকে মাত্র কয়েক শ’ মিটার দূরে অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন স্লোগান দিচ্ছিল। তারা আসামে জিহাদি কর্মকা- বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে।
এ সময় তারা বাংলাদেশী ও জিহাদি আন্দোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানায়। সুব্রামনিয়ান স্বামী তার বক্তব্যে ভারতের কংগ্রেস দলকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি। দেশে জিহাদি কর্মকা- অনুমোদনের জন্য কংগ্রেসকে অভিযুক্ত করেন তিনি। বলেন, ভারতে সব সময়ই জিহাদ অনুমোদন করেছে কংগ্রেস। তাদের কৌশল ছিল হিন্দুদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে সংখ্যালঘুদের একত্রিত করা।
এবারের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিশেষভাবে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী দিল্লির শাহি ইমামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মুসলমানদের ভোট পাওয়ার জন্য। একটা সময় ছিল যখন সরদার প্যাটেলের মতো ব্যক্তির জন্ম হয়েছিল কংগ্রেসে। কিন্তু এখন যারা এ দলকে পরিচালনা করছেন তারা পাকিস্তানমুখী। তারা সেইসব ব্যক্তি যারা দেশের বিরুদ্ধে জিহাদি কর্মকা-কে সমর্থন করেন। উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন স্বাক্ষর করে আসাম চুক্তি। সেই চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি সব সময়ই জানাচ্ছে ইউনিয়ন।
এর একটি ধারায় বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে সুব্রামনিয়ান স্বামী মনে করেন, সীমান্ত বন্ধ করে দিলেই অবৈধ অভিবাসীর সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে না। তিনি মনে করেন, এই চুক্তি এখন পুরনো, বাতিল সময়ের। এটি সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা উচিত। একই সঙ্গে তিনি বলেন, যদি মুসলিম সব অবৈধ অভিবাসী ধর্মান্তরিত হয়ে হিন্দু হতে প্রস্তুত থাকে তাহলে তাদেরকে ভারতে থাকার অনুমতি দেয়া হবে। লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অবৈধ অভিবাসী, বিশেষ করে বাংলাদেশী ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, তার দল বিজেপি ক্ষমতায় এলে ১৭ই মে’র পরে বাংলাদেশী অভিবাসীদের অবশ্যই ভারত ছাড়তে হবে। এ বিষয়ে সুব্রামনিয়ান স্বামীর মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কোন সময়সীমা স্থির করেননি। তিনি কি করেছেন বা কি করেননি সেজন্য তাকে কমপক্ষে একটি বছর সময় দেয়া উচিত। তিনি আরও দাবি করেন, এ সব ইস্যুতে একমাত্র বর্তমানের এনডিএ সরকারই সমস্যার সমধান করতে পারে।