দেশের সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আকাশে-বাতাসে, পত্রিকার পাতায় দেশের উন্নয়নে অনেকের অনেক থিওরি (তত্ত্ব) শুনি। কিন্তু উনাদের দেয়া তত্ত্বাবধায়ক থিওরি ডুবে গেছে। আমি অতো শত থিওরি বুঝি না। আমি একটাই থিওরি বুঝি যে, কীভাবে সব মানুষের মুখে অন্ন, চিকিৎসা, বাসস্থান ও উন্নত জীবন নিশ্চিত করবো। এই থিওরি নিয়ে আমি দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। দেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। কেউ এই অগ্রযাত্রা রুখতে পারবে না।’
শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি আমাদের দুর্নীতি তন্নতন্ন করে খুঁজেছে। আমার বিরুদ্ধে ১০/১২টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেও আমাদের দুর্নীতি খুঁজেছে, তারাও আমার বিরুদ্ধে ৪/৫টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকও দুর্নীতির অজুহাত তুলে পদ্মাসেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে পরে তন্নতন্ন করে খুঁজেও দুর্নীতির অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। বিএনপি, তত্ত্বাবধায়ক ও বিশ্বব্যাংক আমাদের দুর্নীতি খুঁজে পায়নি। কিন্তু যারা আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল, দুর্নীতি করে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছে, বিদেশে পাচার করেছে- সেই বিএনপির নেত্রী এখন আমাদের দুর্নীতি খুঁজে বেড়ান।’প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে মানুষের রক্ত নিয়ে হোলি খেলেছে, এতিমের টাকা পর্যন্ত মেরে খেয়েছে, তাদের গলায় এখন বড় আওয়াজ শুনি। আর তার বিরুদ্ধে মামলা হলেই আমাদের দোষ। উনি যদি এতিমের টাকা মেরে না-ই খাবেন, তবে আদালত থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কেন? সাহস থাকলে মামলা মোকাবেলা করে প্রমাণ করুন, আপনি এতিমের টাকা মেরে খাননি। ’
সারাদেশে কাউন্সিলের মাধ্যমে দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সারাদেশে ওয়ার্ড, থানা, উপজেলা ও জেলার সম্মেলন চলছে। অনেক জেলার সম্মেলন ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। সকল সহযোগী সংগঠনেরও সম্মেলনের কাজ শুরু হয়েছে। আর এই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব গঠন প্রক্রিয়ায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন।’
দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সূচনা বক্তব্যের পর বৈঠকে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
বৈঠকে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছাড়াও আগামী ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুদিবস, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস এবং ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের দলীয় কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়।