‘খালেদা জিয়া নির্বাচনের ট্রেন মিস করেছেন। ২০১৯ সালের একদিন আগেও সেই ট্রেন ফিরে আসবে না। ২০১৯ সালে নির্বাচন করে এই সরকার আবার হ্যাটট্রিক করবে। তারা নির্বাচন মিস করে এখন এই দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয়েছে। এই দেশকে কীভাবে ধ্বংস করা যায়, এদেশের গণতন্ত্রকে কীভাবে নষ্ট করা যায়, সেটা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। তারা একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার জন্য, দেশি ও বিদেশি চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশের গণতন্ত্রকে নষ্ট করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।’
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের উদ্বোধনের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এসব কথা বলেন।
‘৫ জানুয়ারির নির্বাচন না হলে দেশে মার্শাল ল থাকতো। দেশে কোনো গণতন্ত্র থাকতো না। নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনের কারণেই এখন হাজার হাজার লোক নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে।’
বর্তমান সরকার নিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদের বিচার করেছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী লাখ লাখ শহীদের হত্যাকারীদের বিচার করছেন। যেসব নেতা মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, তাদের হত্যাকারীদের ওই খুনি জিয়া, মোশতাক ও এরশাদ বিচার করেননি। এই সরকার সেই যুদ্ধাপরীদের বিচার করছেন। জিয়ার উত্তরসূরীরা এখন সেই বিচার নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন।’
প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘সম্মেলন মানে নেতা ও নেত্রী নির্বাচন নয়, এটা নেতাকর্মীদের মিলন মেলা। সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে কমরেডশিপ আরো পাকাপোক্ত হয়, সৌহার্দ্য বাড়ে। সম্মেলনে দীর্ঘদিন পরে হলে অনেক ক্ষতি হয়। এজন্য দ্রুত সম্মেলন করা উচিত। সময়মতো সম্মেলন করলে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা আসে, নেতৃত্ব প্রাণ পায়।’
বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ বলেন, জাতীর জীবনে স্বপ্ন থাকতে হয়। আওয়ামী লীগ সেই স্বপ্ন দেখেই দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের স্বপ্ন ছিল ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা। সেই পূরণের লক্ষে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করছে। তারা কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়ন করছে। এই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে, একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে বিএনপি জামায়াত তাণ্ডব চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সৈনিকরা সেই তাণ্ডব মেনে নেবে না। আজকের সম্মেলন সেই লক্ষে এগিয়ে যাবে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছিল অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসেই সেই ভাবধারাকে ধ্বংস করে পাকিস্তানি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা করার চক্রান্ত করেছিল। আওয়ামী লীগ সে চক্রান্ত প্রতিহত করেছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচনে অভূতপূর্ব বিজয়ের মধ্য দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সেই চক্রান্ত প্রতিহত করেছিল। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সেই লক্ষেই কাজ করছে।’
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের নেতা সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাংসদ আখতার জাহান।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, সদস্য এসএম কামাল হোসেন, সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাংসদ এনামুল হক, আবদুল ওয়াদুদ দারা ও আয়েন উদ্দিন প্রমুখ।