ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কোনো খবর না থাকলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠানের সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে তোড়জোড় শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ডিসিসির নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় আপাতত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ করতে চায় ইসি।
এজন্য চট্টগ্রাম সিটি এলাকার ভোটার তালিকার সিডি তৈরিসহ প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। সম্প্রতি ইসির সংশ্লিষ্ট শাখা জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছে বলে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২০১৫ সালের মে মাসকে টার্গেট করে এ সিটি নির্বাচনের একটি খসড়া কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে বলেছে ইসি। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকার হালনাগাদ ভোটার তালিকাসহ নতুন ভোটারদের সিডি তৈরি করতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগকে (এনআইডি) নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। কর্মকর্তারা জানান, জুন মাসে রমজান শুরু হওয়ার আগেই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন শেষ করতে চায় ইসি। এজন্য একটি কর্মপরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী সব কাজ শেষ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। ইসি সচিবালয়ের সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম এরই মধ্যে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করে দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ দেন।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ এর ধারা ৩৪-এর উপধারা ১(খ) অনুসারে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। তবে সার্বিক দিক বিবেচনা করে মে মাসকে উপযুক্ত মনে করছে ইসি।
ইসি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ৩১ জানুয়ারি ভোটার তালিকা হালনাগাদ চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত করাসহ নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম স্বল্প সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় মালামাল কেনা ও নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে।
সিসিসিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০১০ সালের ১৭ জুন। নির্বাচিত সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ওই বছরের ২৬ জুলাই। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুসারে নির্বাচিতদের মেয়াদ প্রথম সভা অনুষ্ঠানের দিন থেকে পরবর্তী ৫ বছর পর্যন্ত।
আইনে আরও বলা হয়েছে, ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে পরবর্তী নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সে অনুযায়ী ইসিকে আগামী বছরের ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে এ নির্বাচন করতে হবে। এ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ বলেন, আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে। সে অনুযায়ী ইসির সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নির্বাচনের আগাম হাওয়া : সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোঃ জাবেদ আলী চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে সিটি নির্বাচন যথাসময়ে সম্পন্ন করার কথা বলেন। এর পর থেকে নির্বাচনের আগাম হাওয়া বইতে শুরু করেছে চট্টগ্রামে। এরই মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপও শুরু হয়েছে।
মেয়র প্রার্থী নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে নানা আলোচনা। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে জোর লবিং-গ্রুপিং। আওয়ামী লীগের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর ক্যারিশমা কতটুকু দমাতে পারবেন বর্তমান নগর পিতা বিএনপির মনজুর আলমকে_ এ প্রশ্ন এখন ঘুরে ফিরছে সর্বত্র। দুটি দলেরই সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা আগেভাগে নেমেছেন রাজপথে।
অলিগলিতে শোভা পাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের শুভেচ্ছা ও দোয়া চাওয়ার বাহারি পোস্টার। নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ থেকে শেষ পর্যন্ত কারা প্রার্থী হচ্ছেন, তা নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত।